বর্ষায় মেঘলা আকাশ এবং রোদ কমে যাওয়ার কারণে তা আমাদের শরীরের প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ডি তৈরি করা কঠিন করে তুলতে পারে। শক্তিশালী হাড় বজায় রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য ভিটামিন ডি অপরিহার্য। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ, অফিস অফ ডায়েটারি সাপ্লিমেন্টস অনুসারে, ভিটামিন ডি সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। এটি ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে, যা শক্তিশালী হাড় গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ক্যালসিয়ামের সঙ্গে ভিটামিন ডি অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। অস্টিওপোরোসিস এমন একটি সমস্যা যা হাড়কে জীর্ণ এবং দুর্বল করে, যে কারণে তৈরি হয় ফ্র্যাকচারের প্রবণতা। আপনার ভিটামিন ডি-এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং বর্ষাকালকে পূর্ণরূপে উপভোগ করতে এই ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারগুলো আপনার খাবারের তালিকায় যোগ করুন-
১. চর্বিযুক্ত মাছ
চর্বিযুক্ত মাছ যেমন স্যামন, ম্যাকেরেল এবং টুনা, ভিটামিন ডি-এর ব্যতিক্রমী খাদ্যতালিকাগত উৎস। এগুলো শুধুমাত্র ভিটামিন ডি দেয় না বরং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও দেয় যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (USDA) ফুড কম্পোজিশন ডেটাবেস অনুসারে, চাষকৃত আটলান্টিক স্যামনের ৩.৫-আউন্স (100-গ্রাম) পরিবেশন ৫২৬ আইইউ ভিটামিন ডি প্রদান করে, যা দৈনিক চাহিদার (DV) ৬৬%। সপ্তাহে দুইবার আপনার খাবারে ভাজা বা বেকড মাছ যোগ করুন। যা আপনার ভিটামিন ডি গ্রহণকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
২. ডিমের কুসুম
ডিমের কুসুম শুধুমাত্র নানাবিধ রান্নার উপাদানই নয়, এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডিও রয়েছে। আস্ত ডিম সেদ্ধ করা, স্ক্র্যাম্বল করা বা অমলেটে খাওয়ার অভ্যাস এই প্রয়োজনীয় পুষ্টির দৈনিক চাহিদা পূরণে সাহায্য করতে পারে।
৩. দুগ্ধজাত পণ্য
অনেক দুগ্ধজাত দ্রব্য, যেমন দুধ, দই এবং পনির ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ। লেবেল দেখে নিশ্চিত হোন যে এতে ভিটামিন ডি যুক্ত রয়েছে। এই দুগ্ধজাত খাবারগুলো কেবল ক্যালসিয়ামই সরবরাহ করে না, সেইসঙ্গে আমাদের প্রতিদিনের ভিটামিন ডি-এর প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতেও সাহায্য করে, যা শক্তিশালী হাড় বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪. মাশরুম
মাশরুম, বিশেষ করে যেগুলো বৃদ্ধির সময় সূর্যালোক বা অতিবেগুনী রশ্মির সংস্পর্শে আসে, সেগুলোতে প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ডি থাকে। USDA বলে যে, কিছু বন্য মাশরুম, ইউভি আলোর সংস্পর্শে আসার কারণে সেগুলো ভিটামিন ডি-২ এর চমৎকার উৎস। মোরেলস এক ধরণের বন্য মাশরুম যার প্রতি কাপে ১৩৬ আইইউ ভিটামিন ডি থাকে, যা দৈনিক চাহিদার ১৭% প্রদান করে।
৫. কড লিভার অয়েল
ভিটামিন ডি এর আরেকটি শক্তিশালী উৎস হলো কড লিভার অয়েল। যদিও এর স্বাদ সবার কাছে ভালো নাও লাগতে পারে। তবে কড লিভার অয়েল ক্যাপসুল গ্রহণ করলে বা আপনার ডায়েটে অল্প পরিমাণে যোগ করলে এই প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া যাবে। তবে আপনি যদি কোনো ক্রনিক ডিজিজে ভুগে থাকেন সেক্ষেত্রে এই তেল খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন।
Leave a Reply