সময়সংবাদ ডেস্ক :
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের চেরাগ ঘষে অল্পদিনেই কোটিপতি বনে গেছেন ইমারত পরিদর্শক নির্মল মালো। ২০১৮ সালে রাজনৈতিক প্রভাব ঘাটিয়ে রাজউকে ইমারত পরিদর্শক পদে চাকরি পান।
জানা গেছে, গোপালগঞ্জের নির্মল মালো মাছ ব্যবসায়ী থেকে বাবাকে বানিয়েছেন মৎস্যজীবী লীগ নেতা। আর সে আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে।
এরপর পিছে ফিরেতে তাকাতে হয়নি তার। আলাদিনের চেরাগ ঘষে ঘষে মাত্র ৭ বছরেই পৌরসভার উত্তরপাড়ায় ২০ বিঘা জমির ওপর পোল্ট্রি ফার্ম, কান্দি ইউনিয়নের আমবাড়িতে ৪০ বিঘা জমির মাছের ঘের, উজিরপুরের সাতলায় ৩৫ বিঘা জমির মাছের ঘেরসহ বিভিন্ন এলাকায় নামে বেনামে জমি ক্রয়সহ শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এমন তথ্য জানিয়েছেন এলাকাবাসী। অন্যদিকে কোটালীপাড়া পৌরসভার বাগান উত্তরপাড়া গ্রামে ১০ কাঠা জায়গার ওপর নির্মাণ করেন ডুপ্লেক্স বাড়ি। রাজধানীর ঢাকার আফতাবনগরের ডি-ব্লকের ৫ নম্বর রোডের লেক ভিউ কটেজে আধুনিক ফ্ল্যাট, কুড়িল বিশ্বরোড়ে প্লট ও ওয়ারী এবং মগবাজারে ফ্ল্যাট রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
চাকরির আগে নিত্যগোপাল মালো ছিলেন একজন সামান্য মৎস্য ব্যবসায়ী। নির্মল মালো চাকরি পাওয়ার পর তার অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে এলাকায় প্রভাব প্রতিপত্তি। নিজের প্রভাব খাটিয়ে পিতা নিত্য মালোর জন্য ভাগিয়ে নেন উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ। রাজনৈতিক এই পদ ব্যবহার করে বাবা-ছেলে হয়ে ওঠেন অঢেল সম্পদের মালিক।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, সামান্য দশম গ্রেডে চাকরি করে নির্মল মালোর ঢাকায় রয়েছে দামি প্রাইভেটকার, নিজে ৩টি দামি মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন। কোটালীপাড়ায় রয়েছে ক্যাফে জয় বাংলা নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মাত্র ৭ বছর চাকরি করে তিনি কীভাবে এতো সম্পদের মালিক হলেন?। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে নির্মল মালোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে নির্মল মালোর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ঢাকায় আমার নিজের নামে কোনো ফ্ল্যাট বা প্লট নেই। আমার স্ত্রী উর্মি সাহার নামে যে ফ্ল্যাটটি আছে তা আমার শ্বশুর কিনে দিয়েছেন। কিছু মানুষ আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
নিত্যগোপাল মালো বলেন, আমার পুত্রবধূ উর্মি সাহা (মালো) এক সময় আড়ং এ চাকরি করতেন। তার সেই চাকরির টাকা দিয়ে ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন। এছাড়া আমার জানামতে আমার ছেলে নির্মল বা তার স্ত্রীর নামে ঢাকায় কোনো ফ্ল্যাট বা প্লট নেই। আমি কোটালীপাড়ায় যে মাছের ঘেরগুলো করি তা অধিকাংশই বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লিজ নেয়া।
নির্মল মালো রাজউক মহাখালী জোনে ইমারত পরিদর্শক পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বাগান উত্তরপাড়া গ্রামের নিত্যগোপাল মালোর ছেলে।
তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হলেও তিনি এখনো রয়েছেন বহাল তবিয়তে। সচেতন মহান মনেকরছেন সুষ্ঠু তদন্ত করে নির্মল মালোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া খুবই জরুরী। তা না হলে দেশে দুর্নীতিবাজদের সংখ্যা কমবে না বরং বাড়বে। তাই এখনই সময় ব্যবস্থা নেয়ার।
Leave a Reply