শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন

মৌসুমীর শাড়ি পড়ার সময় একজন ঢুকে পড়ে রুমে

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২.২৯ পিএম
  • ৫৭ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

সময় সংবাদ ডেস্ক :
ছোট পর্দার অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মানের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ে আরেক অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘ এক পোস্ট দিয়েছেন। যেখানে তার সঙ্গে শুটিং সেটে ঘটে যাওয়া এক অপ্রীতিকর ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গভীর রাতে শাড়ি চেঞ্জের সময় একজন রুমে ঢুকে পড়ে। অভিনেত্রীর ফেসবুক পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো-

‘সুটিং এ একটা ঘটনা শেয়ার করি, প্রায় ৩ বছর আগের কথা পুবাইল সুটিং করছি। বেশ রাত হয়েছে কিন্তু অনেক কাজ বাকি। সাধারণত আমরা যখন শুটিং করি বিশেষ করে আউটডোর, তখন কাজের চাপ থাকে বেশি এবং শুটিং লোকেশন এবং মেকাপ রুম বা চেঞ্জ রুম বেশ দুরে হয়। বারবার দৌড়াদৌড়ি করে কাপড় পাল্টাতে বেশ কষ্ট হয় এবং সময় ও বেশি লাগে। রাত ১২.৩০ প্রায়। আমি যেখানে শুটিং করছিলাম তার পাশেই একটা মাটির ঘর ছিল যে ঘরে লাইটের কিছু জিনিস পত্র রাখা ছিল।

মৌসুমীর শাড়ি পড়ার সময় একজন ঢুকে পড়ে রুমে

পরিচালক আমাকে খুব করে অনুরোধ করলেন বারবার মেকাপ রুমে যেয়ে চেঞ্জ করতে যেই সময় লাগছে সেই সময়টাও নেই , উনি বললেন আমি যদি অনুমতি দেই উনি আমার কাপড়ের ব্যাগটা ঐ মাটির ঘরে আনার ব্যবস্থা করবেন ওখানেই চেঞ্জ করতে পারব কিনা। আমি বললাম ঠিক আছে। যদিও সেই ঘরটা মোটেও আরামদায়ক বা সেইফ নয়। তার উপর দেখি ছিটকানিও নাই দরজায়। আমি বললাম তাহলে কীভাবে হবে?

তখন ক্যামেরায় যিনি ছিলেন উনাকে আমি মামা ডাকতাম উনি বললেন মামু তুমি টেনশন নিও না আমি আছি বাইরে পাহারা দিচ্ছি। আমি ওনার কথা বিশ্বাস করে ঐ মাটির ঘরে ঢুকি। সব জানালা বন্ধ করে দেই এবং দরজা চাপিয়ে দেই। আমি নিজেও শুনতে পাচ্ছিলাম ওনারা বাইরেই আছে কথাবার্তা বলছে। পরিচালক তখন সেটে বা অন্য কোথাও।

শাড়িটা পরা শুরু করি নাই তখনো। কি যেন মনে করে শাড়িটার ভাঁজ খুলে আমি পুরো শাড়িটা ওড়নার মত কাঁধের উপর রেখে দেই এবং ঠিক তখনি লাইটের একটা ছেলে হুড়মুড় করে ঘরে ঢুকে পড়ে। আমি চিৎকার দিয়ে উঠি ‘এই চেঞ্জ করি’ খুবি অস্বস্তি কর অবস্থা। ছেলেটা প্রচণ্ড ভয় পেয়ে বের হয়ে গেল। সরি আপু আমি জানতাম না আপনি ছিলেন।

তখন প্রচণ্ড রাগ হল মামার উপর। চিৎকার দিলাম একটা, আমি শুধুমাত্র সহযোগিতা করার জন্য এমন একটা জায়গায় কাপড় পাল্টাতে রাজি হলাম কারণ আমাকে কথা দেওয়া হয়েছিল বাহিরে একজন দায়িত্ব নিয়ে পাহারা দিবে। কিন্তু ছেলেটা উঠান পার হয়ে ঘরে ঢুকে গেল কেউ ওরে বলল না যে ঘরে আমি আছি।

আমি যখন ঘরের ভিতর থেকেই চিৎকার করছি ইউনিটের উপর তাদের দায়িত্বহীনতা নিয়ে তখন সেই মামা (চিত্রগ্রাহক) বিরক্তি নিয়ে বলে উঠলেন ‘আরে বাদ দে তো ও তো ঢুকেই বের হইয়া আসছে এইটুকু সময় আর কি দেখছে।’ ঐ ছেলেটাকে উদ্দেশ্য করে বললো ‘ঐ তুই কিছু দেখছোস?’ বলে অসভ্যর মত হাসতে লাগলো। ছেলেটা কোন উত্তর দিল না।

আমার শরীরের যতখানি অংশ দেখা গেছে সেটা তেমন কোন বিষয়ই না আমি নাকি ওভার রিয়্যাক্ট করছি। এইকথা শোনার পর আমি বের হয়ে জীবনের সর্বোচ্চ রিয়্যাক্ট সেদিন করেছি সেটে। আমার কলিগের কাছে আমার ‘সম্ভ্রম’ এতটা তুচ্ছ? পরিবার ছেড়ে দিনের বেশিরভাগ সময় যাদের সাথে কাজ করি তারা এইভাবে তাদের দায়িত্বহীনতা জাস্টিফাই করবে ?

সেটের বেশিরভাগ মানুষের কাছে মনে হয়েছে, দায়িত্ব নেওয়ার পরও নির্লজ্জের মত ওনার ঐ খ্যাঁক খ্যাঁক হাসায় আমি যে রিঅ্যাকশন দিয়েছি সেটা বেশি বেশি ছিল। সবাই তার অ্যাকশন কেই জাস্টিফাই করে গেল। কিন্তু পরিচালক আমার চিৎকার শুনে সেখানে এসে পুরো ঘটনা শুনে ঐ চিত্রগ্রাহকে সেট থেকে বের করে দেন। এবং উনি নিজেও ভুল বুঝতে পেরে সরি বলেন।

আমি পুরো ঘটনা ওনাকে বলে ওনার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, ‘তোমার পরিবারের কোন মেয়ে এমন অবস্থায় পড়লে দায়িত্বরত মানুষটা দায়িত্ব পালন না করে উল্টা যদি এমন করে রসায় রসায় হাসত, তারপর প্রচণ্ড অপমান বোধে যদি তোমার নিজের মেয়ে বা বোন বা তোমার বউ যদি রিয়্যাক্ট করত তুমি কি বলতা তোমার মেয়েকে, মামনি ওভার রিয়্যাক্ট করতেছো কেন ? আমি বেশি অবাক হয়েছিলাম সেটে ঐদিন ঐ চিত্রগ্রাহকের দায়িত্বহীনতা ও অসভ্যতা কে যারা জাস্টিফাই করছিলেন তাদের উপর।

এবং আবারো অবাক হয়েছি যারা আয়মান সাদিয়ার ভিডিও দেখে পোস্ট করেছেন ‘ভিডিওতে তো তেমন কিছুই দেখা যায় নাই’ তাদের উপর । যিনি ভিডিওটি পোস্ট করেছেন তার জন্যে আমার কিছুই বলার নাই। উনি ভিডিও ডিলিটও করেছেন। আমি সাধুবাদ জানাই কিন্তু সর্বনাশ যা হওয়ার তো হয়ে গেছে। ভিডিও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে গেছে এবং মানুষের ট্রলিং। কারণ আমি ওনাকে যতটুকু চিনি উনি একদমই ক্ষতিকারক মানুষ নন।

বেশ বন্ধু সুলভ হাস্যোজ্জ্বল এবং প্রচণ্ড পরোপকারী মানুষ। আমি বিশ্বাস করতে চাই না উনি উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে এমন কাজটা করেছেন। লুকিয়ে বা গোপন ক্যামেরায় তো নয়ই। বরং উনি অনুতপ্তই হয়েছেন বলে আমি মনে করি। কিন্তু যারা বলছেন ‘এই ভিডিওতে তেমন কিছুই দেখা যায় নাই তাদের জন্য প্রশ্ন আছে, এই তেমন কিছুই না দেখা ভিডিওটির কারণে যে পরিমাণ নোংরা, অসভ্যতা, বুলিং, বডি সেইম, রেইপ থ্রেট মেয়েটাকে সহ্য করতে হয়েছে বা এখনো হচ্ছে সেটা যদি আপনার পরিবারের কোন মেয়েকে সহ্য করতে হয়, আপনি সেটা দেখার জন্য প্রস্তুত আছেন তো?’

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টারে রানার্স আপ হওয়া মৌসুমী হামিদ জন্মগ্রহণ করেন সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় শেষ হবার পর তিনি খুলনা চলে যান ব্যবস্থাপনা শিক্ষায় পড়াশুনার জন্য। সেখানে আজম খান কমার্স কলেজে ভর্তি হন এবং শিক্ষা জীবন শেষ করেন। এর পর ঢাকায় চলে আসেন মিডিয়া জগতে প্রবেশের জন্য। টেলিভিশন ধারাবাহিক ‘রশ্নি’তে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন মৌসুমী হামিদ।

এরপর বেশ কয়েকটি ধারাবাহিকে অংশগ্রহণ করে জনপ্রিয়তা পান। যার মধ্যে ‘রেডিও চকলেট’, ‘ভালোবাসার চতুষ্কনে’ অন্যতম। শুধু ছোট পর্দায় নয়, বড় পর্দায়ও নিজের অভিনয় দক্ষতা প্রমাণ করেছেন তিনি। মৌসুমী হামিদ ২০১৩ সালে ‘না মানুষ’ চলচ্চিত্রে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় প্রবেশ করেন। ২০১৪ সালের ‘হাডসনের বন্দুক’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। শুধু সিনেমা-নাটকেই আটকে থাকেননি হামিদ। মিউজিক ভিডিওতেও চমক দেখিয়েছেন এই তারকা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

অন্যান্য সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

September 2024
T F S S M T W
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  

All rights reserved © somoysangbad.net
Theme Download From CreativeNews