সময়সংবাদ ডেস্ক :
বরগুনার বামনায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত রোগীর তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছে দৈনিক কালেরকন্ঠ পত্রিকার বামনা উপজেলা প্রতিনিধি মনোতোষ হাওলাদার।
গত সোমবার(১৪) অক্টোবর বামনা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত,বরগুনায় ওই সাংবাদিকের নামে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করেন সুদেব হাওলাদার(৩৫)। সে উপজেলার দক্ষিন আমতলী গ্রামের জীতেন্দ্রনাথ হাওলাদারে ছোট ছেলে।
জানা গেছে, গত শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২ টায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের আমতলী গ্রামে আখড়াবাড়ী মন্দিরের সামনের সড়কে সুদেব হাওলাদার কর্তৃক হামলার শিকার হয়েছেন কাঠালিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনুপম হাওলাদার পলাশ।
এঘটনায় ওইদিন রাতে সুদেব হাওলাদারকে প্রধান আসামী করে আরো ৩ জনের নামে বামনা থানায় হত্যার চেষ্টা মামলা দায়ের করেন আহত ওই কৃষি কর্মকর্তার স্ত্রী মিতালী রানী শিপ্রা।
মামলার অপর আসামীরা হলেন, তার ভাইয়ের ছেলে নয়ন হাওলাদার(২৫), দুর্জয় হাওলাদার(১৮) ও বড় ভাই সুমন হাওলাদার(৪০)।
উক্ত ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকার বামনা প্রতিনিধি মনোতোষ হাওলাদার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, শেবাচিম হাসপাতাল, আহতের পরিবার, হামলাকারীসহ বামনা থানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন ।
পরে স্থানীয় সাংবাদিকরা দেশের বিভিন্ন অনলাইন, জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় হামলার ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ করেন।
কাঠালিয়া কৃষি কর্মকর্তা সন্ত্রাসী হামলায় আহত শিরোনামে বিভিন্ন দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় বামনা থানার হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী সুদেব হাওলাদার ওই সাংবাদিকের ওপর ক্ষীপ্ত হয়ে বরগুনা আদালতে একটি হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
জানাগেছে গুরুতর আহত ওই কৃষি কর্মকর্তাকে যারা মুমুর্ষ অবস্থায় নির্বিঘ্নভাবে চিকিৎসা নিতে সহায়তা করেছেন তাদের প্রত্যেকের নামেই ওই হামলাকারী বরগুনা কোর্টে হয়রানীমূলক মামলায় আসামী করেছেন।
হয়রানীমূলক মামলায় আসামীরা হলেন, হামলায় আহত কাঠালিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনুপম হাওলাদার পলাশ, বামনা হাসপাতালের ল্যাব এ্যটেন্ডেন্ট জীবন বেপারী, বামনা বাজারের স্বর্ন ব্যবসায়ি পিযুষ মিস্ত্রী, প্রতিবেশী বিশ্বজীত হাওলাদার, তপন ঢালী ও মিঠুন হাওলাদার।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গত ১২ অক্টোবর দুপুরে আমতলী আখড়াবাড়ীর সামনে বিকাশ হাওলাদারের চায়ের দোকানে পুজার ছুটিতে থাকা কাঠালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুপম হাওলাদার পলাশ চা খাচ্ছিলেন।
এমন সময় পূর্ব শত্রুতার জেরে আসামী সুদেব হাওলাদার একটি কাচের গ্লাস ভেঙ্গে ওই কর্মকর্তার মাথায় এলাপাথারী আঘাত করে একটি অটোরিক্সা যোগে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা গুরুতর আহত রোগীকে বামনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন । সেখানের চিকিৎসকরা তার মাথা থেকে কাচের টুকরো বের করতে সক্ষম না হওয়ায় ও অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
সাংবাদিক মনোতোষ হাওলাদার বলেন, ১২ অক্টোবর সকাল ১১ টা থেকে আমি বামনা প্রেসক্লাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ওসি ও আরো সাংবাদিকদের নিয়ে একটি সভায় ফেসবুক লাইভ করায় ব্যস্ত ছিলাম।
হামলার খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে তথ্য সংগ্রহ করতে যাই। আমি হতবাক, মর্মাহত যে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলেও মামলার আসামী হতে হয় এটা আমার জানাছিলো না।
প্রত্যক্ষদর্শি আখড়াবাড়ীর সামনে সড়কে চা ব্যবসায়ী বিকাশ হাওলাদার জানান, ঘটনার সময় সুদেব হাওলাদার হঠাৎ করে আমার দোকানে ঢুকেই পলাশের ওপর কাচের গ্লাস ভেঙ্গে হামলা করে পালিয়ে যায়।
বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল ইমরান গত ১২ অক্টোবর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অনেক প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলেছি।
সুদেব নামে ওই হামলাকারী একজন ভয়ংকর প্রকৃতির লোক। শুনেছি এর পূর্বেও তিনি একই ধরনের অনেকগুলো ঘটনা ঘটিয়েছেন। এই ঘটনার তদন্ত পূর্ব তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
বামনা থানার অফিসার ইন চার্জ মো. হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন,উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে হত্যা চেষ্টার মামলা নিয়েছি। একজন আসামীকে ঘটনার দিন পুলিশ গ্রেফতার করে বরগুনা পাঠিয়েছে। বাকিদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
Leave a Reply