সময় সংবাদ ডেস্ক :
বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) সকাল ৯টা ২০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি শুরু করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। অ্যাটর্নি জেনারলের শুনানি শেষ হলে শুনানি শুরু করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
১৯৭২ সালে মূল সংবিধানে বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ছিলো। ৭৫ সালে এই ক্ষমতা সংসদের কাছ থেকে সরিয়ে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে দেয়া হয় রাষ্ট্রপতির কাছে। জিয়াউর রহমানের আমলে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত করা হয় সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পদ্ধতি। কাউন্সিলের মাধ্যমের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হতো।
২০১৪ সালে আবারো এ ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ফিরিয়ে নেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ঐ বছরই এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট হয়। হাইকোর্ট সেই সংশোধনী বেআইনি ঘোষণা করেন।
আওয়ামী লীগ সরকার আপিল করলেও সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। ফলে পুনরুজ্জীবিত হয় সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল। এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে তখনকার সরকার। ঐ রিভিউ পিটিশন গত আট বছরেও শুনানির উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উচ্চ আদালতের বেশ কয়েক জন বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ ওঠায় তার তদন্ত ও ব্যবস্থা নেয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। ফলে রিভিউ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। রিভিউ নিষ্পত্তি হলেই বিচারপতি অপসারণের পথ উন্মুক্ত হবে বলে জানান আইনজ্ঞরা।
Leave a Reply