নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরগুনা জেলার বামনা থানায় বেড়েছে দালালের দৌড়াত্ম্য। অভিযোগ রয়েছে দালাল না ধরলে পাওয়া যায় না কাঙ্ক্ষিত সেবা।এমনকি দালালের মাধ্যমে থানায় নিয়মিত সালিশ বসাচ্ছে পুলিশ।সেখানে অর্থ আত্মসাৎসহ জায়গা-জমি দখল ও দখলমুক্ত করতে বিচার করা হচ্ছে চুক্তির বিনিময়ে।
বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘তালিকা দেন- দেখি কে দালাল’। থানায় সালিশ বসানো প্রসঙ্গে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিচার-সালিশে তেমন আগ্রহ দেখান না। এ কারণে থানায় কিছু পারিবারিক বিরোধ মীমাংসা করা হয়।
অভিযোগ আছে, ফ্যাসিস্ট সরকারের মদতপুষ্ট কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা এখনো থানায় কর্মরত। তারা পুলিশ প্রসাশনকে বিতর্কিত করতে নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। অভিযোগ আছে, বামনা থানার এএসআই, এসআই থেকে ইন্সপেক্টরদেরও নিজস্ব দালাল রয়েছে। দালালরা প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় সমাধানে পার্টির সঙ্গে অর্থের চুক্তি করে পছন্দের পুলিশ কর্তাদের দিয়ে থানায় প্রায় নিয়মিত সালিশ বসাচ্ছেন। বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে ইচ্ছেমতো দেয়া হয় রায়।
এতে অনেক সময় বাদী-বিবাদী দুই পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হন এমন অভিযোগও রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, সাধারণ মানুষ থানায় সেবা নিতে অনেক সময় নিরাশ হয়ে ফিরে যান। দালাল ধরলে মেলে কাঙ্ক্ষিত সেবা। দালাল না ধরলে পুলিশও সেবা দিতে আগ্রহ দেখায় না। তথ্য মতে
একশ্রেণীর টাউট-বাটপাররা নিজেদেরকে নানা পরিচয়দান করে থানার অফিসার ইনচার্জ হতে শুরু করে দারোগা, মুন্সি এমনকি কনষ্টেবলদের সঙ্গে সখ্যতা করে থানার গোপন তথ্য ফাঁস করছে।
এসব দালালরা বিভিন্ন সময়ে মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও ভূমিদস্যূদের পক্ষে তদ্বির ও
চার্জশীট নরম্যাল করাসহ নানা প্রকার অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এই দালাল চক্রটি প্রতিনিয়তই থানার দূর-দূরান্ত হতে আসা বিচারপ্রার্থী নারী-পুরুষদেরকে নানাভাবে ফুসলিয়ে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে সর্বশান্ত করছে। প্রিতিদিন সকাল ১০ টা হতে মধ্যরাত পর্যন্ত বামনা থানা কম্পাউন্ড ও আশ পাশের চা-পানের দোকানে অবস্থান করে এ চক্রটি। তারা একের পর এক অপকর্ম চালিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে থানা পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন
করছে। এসব দালালদের সঙ্গে বামনা থানা তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী, কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীর গোপন আঁতাত রয়েছে বলে জানা গেছে। সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে পুলিশী অভিযান (পুলিশ থানা থেকে বের হওয়ার আগেই) মুহুর্তের মধ্যে গোপন তথ্য জানতে পারছে অপরাধীরা। এ কারণে বামনা থানা নিরাপত্তার অভাব সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে ও অপরাধ নির্মূল করতে বামনা থানা দালালমুক্ত চান এলাকাবাসী।
এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেয়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন বামনা উপজেলার সচেতন মহল।
Leave a Reply