বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ০১:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
বাংলাদেশ বিমানের যানবাহন শাখা যেন এক মাদকের আস্তানা আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি: বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা একযোগে ৩৩ ডেপুটি জেলারকে বদলি বরিশাল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের মশারীও জুটছে না নির্বাচনে সহায়তায় জাতিসংঘ ও জাপানের সাথে ইসির চুক্তি ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম নয়, গণমাধ্যমও ভুল তথ্যের উৎস হয়ে উঠছে’ রাতের ভোট নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক সিইসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বের পথে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড সরকারি প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটায় আওয়ামী স্টাইলে লুটপাট চট্টগ্রামে থানা ঘেরাও করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা জুলাই গণঅভ্যুত্থান: গণমাধ্যম সম্প্রচার বন্ধ করেছিলেন ফ্যাসিস্ট সরকার ২ জুলাই: দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের রাজপথে থাকার ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টাকে সিইসি জানিয়েছেন,‘ফুল গিয়ারে’ আছে নির্বাচন কমিশন নতুন বিপাকে হাসিনা-রেহানা,জয়-পুতুল ও টিউলিপ ৩৮৬ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১v ‘পুলিশ পরিচয়ে ফেসবুক ব্যবহার করা যাবে না’ স্বৈরাচার পতনে ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয়, সেই কাজ করছি: প্রধান উপদেষ্টা ২০৩০ সালের মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ

বাংলাদেশ বিমানের যানবাহন শাখা যেন এক মাদকের আস্তানা

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫, ৪.৪৫ এএম
  • ১৩ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে
বিমান বাংলাদেশ, ছবি: সংগৃহীত

প্রকাশ্য এসেছে ভয়াবহ অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র
গড়ে উঠেছে একটি সুসংগঠিত মাদক সিন্ডিকেট
এ অপরাধে জড়িত প্রভাবশালী কিছু কর্মচারীরা


মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির: বাংলাদেশ বিমানের যানবাহন শাখা ঘিরে নানা সময় বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও এবার আরও ভয়াবহ চিত্র সামনে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, এই শাখাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে একটি সুসংগঠিত মাদক সিন্ডিকেট। অভিযোগ রয়েছে—কিছু প্রভাবশালী কর্মচারি ও তাদের বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে বিমানবন্দরে মাদক পরিবহন ও লেনদেন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, এই শাখার কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে নানাভাবে সুবিধা আদায় করছেন। এই চক্রটি শুধু মাদক নয়, বিভিন্ন চোরাচালানি ও অবৈধ পণ্যের ট্রান্সপোর্টেও জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

বিশেষ করে যানবাহন শাখার কয়েকজন সুপারভাইজার ও ড্রাইভারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, তারা দায়িত্বে থাকার সুযোগ নিয়ে যানবাহনের আড়ালে চোরাচালান, জ্বালানি তেল চুরি এবং মাদক সেবনের মতো অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত। এছাড়া, কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগও উঠেছে, যা পুরো যানবাহন শাখার ভাবমূর্তি ও নির্ভরযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

অভিযোগ উঠেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যানবাহন শাখার বর্তমান সিডিউলিং সুপারভাইজার মো. রেজাউল হাসান (পি-নং ৩৭১৫৫) মাদক সংশ্লিষ্ট নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত। অনেকে তাকে ‘মাদক সম্রাট’ হিসেবেও অভিহিত করছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি মাদক সেবন ও ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এবং দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এসব অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

সূত্র জানায়, রেজাউল হাসান বর্তমান যানবাহন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মাসুদ পারভেজ রানার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। অভিযোগ রয়েছে, তার ছত্রছায়ায় মাদক ব্যবসা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এবং এটি পুরো শাখায় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, আমরা নিরুপায়। যারা এসব করছে তারা প্রভাবশালী, কেউ মুখ খুললে বদলি বা চাকরি হারানোর ভয় থাকে।

এদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যানবাহন শাখার সিডিউলিং সুপারভাইজার মোঃ রেজাউল হাসান (পি-নং ৩৭১৫৫)-এর বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও ব্যবসার অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এ বি এম রওশন কবীর বলেন, “বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে সবসময় শৃঙ্খলা, আইন মানা ও স্বচ্ছতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদি আমাদের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে মাদক সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ ওঠে এবং তা যথাযথ তদন্তে প্রমাণিত হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। আমরা কোনোভাবেই মাদক বা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কাউকে বরদাস্ত করব না। ইতোমধ্যেই আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি এবং যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করতে কাজ চলছে।”

তিনি আরও বলেন, “মাদক নির্মূলে বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। এই বিষয়ে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা অভ্যন্তরীণ তদন্ত এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করি।”

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি সবার দাবি, দ্রুত এই শাখার দুর্নীতি ও মাদক সংশ্লিষ্টতা তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। অন্যথায় বিমানবন্দরের মতো স্পর্শকাতর স্থানের নিরাপত্তা ও সুনাম দুটোই ঝুঁকির মুখে পড়বে।

সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক

সংবাদটি শেয়ার করুন

অন্যান্য সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *