নিউজ ডেস্ক, সময় সংবাদ : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীদের মাসজুড়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কর্মসূচি জুলাই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকেই এনসিপি নেতাদের প্রতিহত করতে সক্রিয় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। সবশেষ সমাবেশ শেষে ফেরার পথে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর হামলা চালায় তারা।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটার পর শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশ স্থলে থেকে ফেরার পথে চৌরঙ্গী মোড়ে এই হামলা চালানো হয়। এ সময় পুলিশ বাধা দিতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসে হামলাকারীদের প্রতিরোধের চেষ্টা চালায়। পুলিশও হামলাকারীদের সরিয়ে দিতে ফাঁকা গুলি বর্ষণ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তেও দেখা গেছে।
এ সময় এনসিপি নেতা-কর্মীদের গাড়িবহর লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে এনসিপি নেতাদের নিয়ে পিছু হটতে দেখা গেছে।
বর্তমানে নাহিদ, হাসনাত, সারজিস, ডা. জারাসহ এনসিপির নেতারা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকেল ৪টা) উল্লেখিত অবস্থা বিরাজ করছে।
এনসিপি নেতারা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমাদের গাড়িবহরের একটি অংশ মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে। তাদের ওপর হামলার আশঙ্কা করছি। গাড়িবহরের একটি অংশ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হামলার কারণে যেতে পারেনি। তাই পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছি।
জানা যায়, গোপালগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রেখেছে হামলাকারীরা। তাতে বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়েছেন এনসিপির নেতারা।
সমাবেশ শুরুর আগে দুপুর দেড়টার দিকে এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুর করে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। হামলা চালিয়ে ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং চেয়ার ভাঙচুর করে তারা। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে বলে জানা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের কর্মীরা হঠাৎ করেই মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে হামলা শুরু করে।
এর আগে সকালে সদর উপজেলার গান্ধীয়াশুর এলাকায় ঘোনাপাড়া-টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কে গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করেন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে ইউএনওর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম রকিবুল হাসান।
ইউএনও বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে পদযাত্রা ও পথসভা করার কথা রয়েছে। তাদের কর্মসূচি বানচালের জন্য আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা প্রথমে পুলিশের ওপর হামলা করে, পরে আমার গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে।
তাছাড়া, সকালে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দায়ী করেছে পুলিশ। গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মো. সাজেদুর রহমান বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির মাসজুড়ে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে পদযাত্রার কথা রয়েছে তাদের। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতাদের আগমনের কথা রয়েছে। তাদের পদযাত্রা বানচালের জন্য আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকরা সদর উপজেলার গান্ধিয়াশুর এলাকায় ইউএনওর গাড়ি বহরে হামলা ও ভাঙচুর করে।
Leave a Reply