মাহমুদুল হাসান আশিক :
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই সরব হয়ে উঠছে বরগুনা-২ আসনের রাজনৈতিক মাঠ। তবে এই সরবতার ভেতরে নেই আওয়ামী লীগ। দলটির দীর্ঘদিনের আধিপত্য থাকা আসনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে তাদের তেমন কোনো রাজনৈতিক তৎপরতা আর চোখে পড়ছে না। ফলে আসনটিকে ঘিরে বিএনপি ও ইসলামপন্থীদের তৎপরতা নিয়ে আলোচনা বাড়ছে।
পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী উপজেলা নিয়ে গঠিত বরগুনা-২ আসন (সংশোধিত সংসদীয় আসন-১০৯)। ২০০৮ সালের আগে বেতাগী ছিল বরগুনা-১ আসনের অন্তর্ভুক্ত। পরবর্তী সময়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে এটি বরগুনা-২ এ যুক্ত হয়।

নূরুল ইসলাম মণি
আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পালাবদল করে ক্ষমতায় থেকেছে। তবে নবম থেকে দ্বাদশ সংসদ পর্যন্ত আসনটি আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন একাধিক। এর মধ্যে আছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মণি। তিনি বলেন, গত ১৫ বছর তাঁকে এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। মামলা-হামলার মুখেও তিনি দলের প্রতি অনুগত ছিলেন।

মাওলানা শামীম আহমেদ
জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শামীম আহমেদ ও মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের অবহেলা ও শোষণের বিরুদ্ধে কথা বলতেই নির্বাচন করতে চাই। একজন আলেম হিসেবে আমি মনে করি, মানুষের পাশে থেকে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই ইসলামের শিক্ষা। গত ২৮ বছর ধরে ধাপে ধাপে দল ও মানুষের সেবা করেছি। এবার সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই।
এ ছাড়া সাবেক কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান মনির ও অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল হারুনুর রশিদ খানও মনোনয়ন চাইছেন।
এদিকে ইসলামপন্থীরা ও আসনটি পেতে মরিয়া হয়ে হয়ে উঠেছেন। তবে, আসনটিতে ইসলামপন্থীদের উত্থান নতুন নয়। ১৯৯৬ সালে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী গোলাম সরোয়ার হিরু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সৈয়দ এছহাক মো. আবুল খায়ের পান প্রায় ১৬ হাজার ভোট। আর ২০১৩ সালের উপনির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকে গোলাম সরোয়ার হিরু পান প্রায় ৫৮ হাজার ভোট।

ডা. সুলতান আহমেদ
এখানে জামায়াতে ইসলামী থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ডা. সুলতান আহমেদকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি এরই মধ্যে তিন উপজেলায় সভা-সমাবেশ শুরু করেছেন। তাঁর দাবি, এখন জামায়াতের জনপ্রিয়তা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি।
অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মুফতি মিজানুর রহমান কাসেমীকে

মিজানুর রহমান কাসেমী
প্রার্থী করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপির দখলবাজি ও চাঁদাবাজিতে মানুষ অতিষ্ঠ। ইসলামপন্থীরা একত্রে ভোট দিলে তিনি শতভাগ নিশ্চিত বিজয়ী হবেন।
এ আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য দল এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। মাঠপর্যায়ে তাদের কোন তৎপরতাও চোখে পড়ছে না।
এলাকার সাধারণ ভোটারদের প্রত্যাশা, তাঁরা এমন প্রার্থী চান যিনি সৎ, যোগ্য, এলাকার উন্নয়নে নিবেদিত এবং নৈতিক রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব করবেন। তরুণ ভোটারদের দাবি, প্রতিযোগিতামূলক ও অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা হোক।
Leave a Reply