শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
সরকারি টানা ৩ দিনের ছুটি, পাবেন না যারা দুই বড় বিষয়ে ঐকমত্যে রাজনৈতিক দলগুলো: আলী রীয়াজ আদালত ফ্যাসিস্টমুক্ত করলেই বিচারবিভাগ কলঙ্কমুক্ত হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ ব্যাটিংয়ে দুর্দশা নিয়ে যা বললেন বিসিবি সভাপতি ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও মাফিয়াতন্ত্র শেষ হয়নি : নাহিদ বিচার ব্যবস্থাকে দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে: ডা. তাহের গুমের ঘটনায় সেনাসদস্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে ব্যবস্থা : সেনাসদর দেশে বেড়েছে খাদ্য মজুদ: প্রেস উইং বাংলাদেশকে অনুদান দিচ্ছে সুইডেন কুমিল্লায় গণপিটুনিতে মা, ছেলে-মেয়ে নিহত বাংলাদেশ বিমানের যানবাহন শাখা যেন এক মাদকের আস্তানা আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি: বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা একযোগে ৩৩ ডেপুটি জেলারকে বদলি বরিশাল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের মশারীও জুটছে না নির্বাচনে সহায়তায় জাতিসংঘ ও জাপানের সাথে ইসির চুক্তি ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম নয়, গণমাধ্যমও ভুল তথ্যের উৎস হয়ে উঠছে’ রাতের ভোট নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক সিইসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বের পথে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড সরকারি প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটায় আওয়ামী স্টাইলে লুটপাট

সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী লীগ মানুষকে শান্তি দেয়নি

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪, ১২.৩১ এএম
  • ১৪৩ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

নীলফামারী প্রতিনিধি : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সাড়ে পনের বছরে মানুষকে শান্তি দেয়নি। দেশবাসির শান্তি কেড়ে নিয়েছিল। সকল ধরণের সকল বর্ণের মানুষ তাদের কাছে নির্যাতিত হয়েছিল। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের অফিসগুলো সীলগালা করে বন্ধ করে দিয়েছিল। ঘরে বসেও জামায়াতের নেতাকর্মীরা শান্তি পায়নি। ঘর থেকে তুলে নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহীর মামলা দেয়া হয়েছে। শীর্ষ নেতাদের নামে যুদ্ধাপরাধীর মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে বিচারের নামে খুন করা হয়েছে।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে নীলফামারী বড় মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নীলফামারী জেলা শাখা আয়োজিত কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ১০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসার পরেই ঝাঁল মিটিয়েছিল আমাদের দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীর উপর। তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে ৫৭জন চৌকস, সাহসী ও দেশপ্রেমিক সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে। হত্যা করেছিল নির্মমভাবে তাদের পরিবারের সদস্যদেরও। লাশ ভাসিয়ে দিয়েছিল পিলখানার ড্রেনের মধ্যে। রাতে বাতি নিভিয়ে দিয়ে ঘাতকদের পিলখানা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই ঘাতকরা কারা ছিল? এদের পরিচয় জাতিকে জানতে দেয়া হয়নি। সেনাবাহিনী নিজস্ব একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। তারা তন্ন তন্ন করে খোঁজ নিয়ে সত্যতা তুলে এনেছিল। কিন্তু সেনাবাহিনীর তদন্ত রির্পোট প্রকাশ করতে দেয়া হয়নি। এসময় এ হত্যাকান্ডের যারা প্রতিবাদ করেছিল তাদের চাকরীচ্যুত করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, পিলখানার ঘটনার পরেই তাদের পরবর্তী টার্গেট ছিল জামায়াতে ইসলামীর উপর। ২৯ জুন তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, নায়েবে আমীর আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ও সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলো তারা ইসলামের অবমাননা করেছে। যারা দেশের মানুষের শান্তি, সম্মান ও কল্যাণ উপহার দেয়ার জন্য জীবন বাজি রেখে লড়াই করলেন তাদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হলো। এরপর একে একে জামায়াতের শীর্ষ ১১ নেতাকে যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হলো। ফ্যাসিস্ট সরকারের অভিযোগ ছিল তারা নাকি ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময় নানা অপকর্ম করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলো খুন, ধর্ষণ, লুটপাত ও ঘরবাড়ীতে অগ্নিসংযোগের।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, দেশবাসী স্বাক্ষী। আমি বুকে হাত দিয়ে বলছি আমাদের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল তা ষোলো আনা মিথ্যা। তার প্রমাণ হলো ১৯৭২ সালে শেখ মুজিবের শাসনামলে ৭১ সালে যারা বিভিন্ন অপরাধ করেছিল তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। যুদ্ধপারাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে যে মামলা হয়েছিল সেখানে ১টি মামলাও তাদের বিরুদ্ধে ছিল না। এছাড়া শেখ মুজিব সরকার সে সময় যাচাই-বাচাই করে ১৯৫ জনের যে তালিকা করেছিল, তার মধ্যে বর্তমান বাংলাদেশের সীমানার ভিতরে কোন নাগরিক ছিল না।

তিনি আরও বলেন, সেই শহীদদের আপনারা উত্তরসূরী। আপনারা ২৪ এ শহীদদের উত্তরসূরী। যে শহীদদের রুহানী লাশ আপনাদের জাতীর ঘাড়ে। এখন আমাদের আচরণে প্রকাশ করতে হবে। আগামীর দেশ পরিচালনায় সেটা প্রকাশ করতে হবে। এই শহীদদের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আগামীর দেশ পরিচালনায় এমন একদল মানুষ লাগবে যারা মুখে যা বলবে কাজেও তা করবে।

তিনি বলেন, ফ্যাস্টিস শেখ হাসিনা সাড়ে পনের বছর দেশ শাসন করেছে। তিনি যখন কথা বলতেন, মানুষ তখন বলতেন হাসিনা, আমরা আর হাসি না। যেমন ছিল প্রধানমন্ত্রী, তেমন ছিল তার উজির-নাজিরা। কে কার চেয়ে কত মিথ্যা বলতে পারে এনিয়ে ছিল প্রতিযোগিতা। তারা জাতিকে ধোঁকা দিয়েছে। তারা জাতির উপর জুলুম করেছে। খুন, গুম ও আয়নাঘর তৈরী করেছে। হাজারো মায়ের বুক খালি করেছে। এটাই ছিল বাংলাদেশর চলমান বাস্তবতা।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনা বলেছিলেন পালাবো না। তিনি চলেন গেলেন তার প্রিয় দেশে। তারা আমাদের প্রতিবেশি। আমরা তাদের সম্মান করি। কোন প্রতিবেশিকে কষ্ট দেয়া আমরা বিশ্বাস করি না। অনুরুপ ভাবে কোন প্রতিবেশির কাছ থেকেও আমরা সুপ্রতিবেশি সুলভ আচরণ পেতে চাই। আমরা আমাদের প্রতিবেশিকে অনুরোধ করব। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৫০টিরও অধিক মামলা হয়েছে। আমাদের বিচারালয় যখন তাকে চাইবেন তখন তাকে আইনশৃংঙ্খলা বাহিনার হাতে তুলে দিবেন।

তিনি বলেন, সাড়ে ১৫ বছরে তারা গোটা জাতির বিরুদ্ধে জুলুম করেছে। বিচারের নামে তামাশা করেছে। অবিচার করেছে। সেটি যেন শেখ হাসিনা ও তার দোষরদের কারো ক্ষেত্রে না হয়। তাদের জন্য যেন ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হয় এটা আমরা চাই। আমরা চাই বৈষম্যহীন ন্যায় বিচারের পরিবেশ সৃষ্টি করতে।

শফিকুর রহমান বলেন, রাস্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে আমরা দূর্নীতি করব না, কাউকে দূর্নীতি করতে দিবোনা। আমরা ঘুষ খাবো না, কাউকে খেতে দিবো না।

নারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা এমন একটা বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে সমাজের উন্নয়নে নারীরা অবদান রাখতে পারে। নারীরা নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মর্যাদার সাথে জাতি গঠনে অবদান রাখবেন।

নীলফামারী জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারী আন্তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মীসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও রংপুর- দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারি অঞ্চল পরিচালক মাওলানা মমতাজ উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টিম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বিলাল। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাবেক রংপুর মহানগর সেক্রেটারী ওবায়দুল্লাহ সালাফী, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. খায়রুল আনাম, জলঢাকা আমীর মোখলেছুর রহমান, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য প্রভাষক ছাদের হোসেন, জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকার, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশেনের সভাপতি মনিরুজ্জামান জুয়েল প্রমূখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

অন্যান্য সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ

November 2025
T F S S M T W
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031