নিজস্ব প্রতিবেদক:
অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
শুক্রবার বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। তার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মো. আবেদ চৌধুরী মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
উপদেষ্টার একান্ত সচিব মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, শুক্রবার দুপুরে বাসায় সবার সঙ্গে খাবার খেতে বসলে হঠাৎ করেই পড়ে যান স্যার। এরপর ল্যাব এইড হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক দুপুর ৩টা ১০ মিনিটের দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বর্তমানে তার মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে।
উপদেষ্টার ছেলে মুয়াজ আরিফও গণমাধ্যমকে তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, তার বাবা উপদেষ্টা হাসান আরিফ হঠাৎ করে মেঝেতে পড়ে যান। এরপর তাকে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গত ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছিলেন হাসান আরিফ। পরে তাকে ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভূমি এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন হাসান আরিফ।
২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মামলা চলাকালে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার আইনজীবীও ছিলেন হাসান আরিফ। তিনি ১৯৭০ এর দশকে এ এফ হাসান আরিফ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করা এ এফ হাসান আরিফ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে শিক্ষা শেষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন, পরে বাংলাদেশ হাইকোর্টে যোগ দেন।
এর আগে, তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে ছিল- সড়ক ও জনপথ বিভাগ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন লিমিটেড ও গ্রামীণফোন বাংলাদেশ। তিনি ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির কমপ্লেক্সের উপদেষ্টাও ছিলেন।
এছাড়াও এফ হাসান আরিফ বিদেশি বিনিয়োগ, সালিস, বাণিজ্যিক সালিস, কর্পোরেট আইন, আরবিট্রেশন এবং বিকল্প বিরোধ সমাধান নিয়ে কাজ করছিলেন।
Leave a Reply