স্টফ রিপোর্টার:
আসন্ন ২০২৫-২৬ বাজেটে তামাকজাত পণ্যের কর ও মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার বিবেচনায় এই দাবি জানায় তারা।
আজ বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তামাকজাত পণ্যের কার্যকর করারোপ এবং মূল্য বৃদ্ধির যৌক্তিক দাবি তুলে ধরা হয়। বর্তমানে বাজারে নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ, ও অতি উচ্চ- এই চার স্তরের সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। আসন্ন অর্থবছরে নিম্ন ও মধ্যম- এই দুটি স্তরকে একিভূত করে একটি নতুন স্তর তৈরি করে মোট স্তরের সংখ্যা তিনটিতে নামিয়ে আনার প্রস্তাব জানানো হয়। এই নতুন তিন স্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার একেকটি প্যাকেটের দাম যথাক্রমে ৯০, ১৪০ ও ১৯০ টাকা ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এবং গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাক্সিন অ্যান্ড ইনিশিয়েটিভের (গ্যাডী) চেয়ারম্যান ডা. নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, টোব্যাকো অ্যাটলাস ২০১৮-এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন। সে হিসেবে প্রতিদিন ৪৪২টি প্রাণ অকালে ঝরে যাচ্ছে। তামাকের কারণে বিভিন্ন রোগ যেমন- হৃদরোগ, ফুসফুস, ডায়াবেটিস, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসরোগ, ক্যানসার, কিডনি রোগ এবং আঘাতজনিত রোগ ক্রমেই বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট রোগের কারণে তরুণ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা অকালেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। এই অকাল মৃত্যু হ্রাসে বর্তমান সরকারকে এখনই তামাকজাত পণ্যের ওপর কার্যকর করারোপ এবং মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের পলিসি অ্যাডভাইজর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় যেখানে তামাকপণ্যের ওপর কার্যকর করারোপ করা জরুরি সেখানে তামাক কোম্পানিগুলোর নানা রকম মিথ্যাচার এটিকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তামাকপণ্যের ওপর অতিরিক্ত করারোপ এবং দাম বৃদ্ধি করলে সরকারের রাজস্ব কমে যাবে বলে তামাক কোম্পানি প্রচারণা চালাচ্ছে, যা মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়। আসন্ন বাজেটে তামাকপণ্যের ওপর কার্যকর করারোপ এবং দাম বৃদ্ধি করা হলে ৬৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়, ১৭ লাখ মৃত্যু রোধ, ২৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে ধূমপান থেকে বিরত এবং ১৭ লাখ তরুণকে ধূমপান শুরু করা থেকে বিরত রাখা সম্ভব। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষায় আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তামাকজাত পণ্যের কর ও মূল্য বৃদ্ধির কোনও বিকল্প নেই।’
Leave a Reply