বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম
গুমের ঘটনায় সেনাসদস্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে ব্যবস্থা : সেনাসদর বাংলাদেশকে অনুদান দিচ্ছে সুইডেন কুমিল্লায় গণপিটুনিতে মা, ছেলে-মেয়ে নিহত বাংলাদেশ বিমানের যানবাহন শাখা যেন এক মাদকের আস্তানা আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি: বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা একযোগে ৩৩ ডেপুটি জেলারকে বদলি বরিশাল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের মশারীও জুটছে না নির্বাচনে সহায়তায় জাতিসংঘ ও জাপানের সাথে ইসির চুক্তি ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম নয়, গণমাধ্যমও ভুল তথ্যের উৎস হয়ে উঠছে’ রাতের ভোট নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক সিইসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বের পথে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড সরকারি প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটায় আওয়ামী স্টাইলে লুটপাট চট্টগ্রামে থানা ঘেরাও করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা জুলাই গণঅভ্যুত্থান: গণমাধ্যম সম্প্রচার বন্ধ করেছিলেন ফ্যাসিস্ট সরকার ২ জুলাই: দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের রাজপথে থাকার ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টাকে সিইসি জানিয়েছেন,‘ফুল গিয়ারে’ আছে নির্বাচন কমিশন নতুন বিপাকে হাসিনা-রেহানা,জয়-পুতুল ও টিউলিপ ৩৮৬ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১v ‘পুলিশ পরিচয়ে ফেসবুক ব্যবহার করা যাবে না’

চাঁদে যাওয়ার প্রশিক্ষণ নিলেন প্রথম বাংলাদেশি নারী

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫, ২.২৪ পিএম
  • ৫৬ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে
রুথবা ইয়াসমিন। ছবি : সংগৃহীত

নিউজ ডস্কে,সময় সংবাদ: প্রথমবার মহাকাশে পা রাখবেন কোনো এক বাংলাদেশি। এও কী ভাবা যায়! আবার তিনি যদি হন নারী, তাহলে তো বিস্ময়ের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। তেমনি এক বিস্ময় জাগানিয়া নাম রুথবা ইয়াসমিন। না, তিনি এখনও মহাকাশে যাননি। তবে যাওয়ার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এক বুক স্বপ্ন নিয়ে যিনি মহাকাশ ভ্রমণের জন্য তিন দিনের একটি প্রশিক্ষণ নেন। স্পেস নেশন আয়োজিত ‘মুন পাইওনিয়র মিশন’-এর প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন এই বাংলাদেশি পদার্থবিদ ও প্রকৌশলী। গত ১৬ এপ্রিল স্পেস নেশন জানায়, তাদের প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ সদস্যই নারী এবং রুথবা তাদের একজন।

স্বপ্নপূরণের ঘোষণা

১৬ এপ্রিল স্পেস নেশন যখন ‘মুন পাইওনিয়র মিশন’-এর সদস্যদের নাম ঘোষণা করে, তখন তা সামাজিক মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করে। মূলত এটি একটি নারীকেন্দ্রিক মহাকাশ মিশন, যেখানে একজন পুরুষ সদস্যও রয়েছেন। এই বিশেষ দলে রয়েছেন রুথবা, যিনি নিজেকে শুধু একজন বাংলাদেশি নারী হিসেবে নয়, বরং এক আন্তর্জাতিক কণ্ঠস্বর হিসেবে মহাকাশে যাওয়ার চেষ্টায় এগিয়ে রয়েছেন।

ঘটনাটি যেন আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে, যখন এর ঠিক দুই দিন আগে, ১৪ এপ্রিল, পপ গায়িকা কেটি পেরি ব্লু অরিজিন-এর একটি অল-ফিমেল ক্রু নিয়ে মহাকাশে যাত্রা করেন। দুটি ভিন্ন ঘটনা, একটি অভিন্ন বার্তা- মহাকাশ এখন আর পুরুষদের একচেটিয়া ক্ষেত্র নয়।

কীভাবে এই যাত্রা শুরু?

ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুলে পড়া রুথবা ইয়াসমিন সেই মেয়ে, যার মাথায় ছিল প্রশ্ন আর হৃদয়ে ছিল অজানাকে জানার আকাঙ্ক্ষা। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের মাউন্ট হোলিওক কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক (সাথে গণিতে মাইনর) করেন রুথবা। এরপর কোভিড-১৯ মহামারির সময় বাংলাদেশে ফিরে এসে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ডেটা সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।

২০২৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ আলাবামা থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স করে নিজের অধ্যয়নকে আরও বিস্তৃত করেন।

গবেষণা থেকে মহাকাশ প্রশিক্ষণ

মহাকাশ আবহাওয়া নিয়ে গবেষণাই তাকে মহাকাশযাত্রার প্রশিক্ষণে আগ্রহী করে তোলে। তিনি বিশেষভাবে গবেষণা করেন ‘জিওম্যাগনেটিক স্টর্ম’বা চৌম্বকীয় ঝড় নিয়ে, যা পৃথিবীর আয়নমণ্ডল ও চৌম্বকক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে। এখান থেকেই স্বপ্ন দেখেন একজন মহাকাশচারী হওয়ার।

প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা

রুথবার মুন পাইওনিয়র মিশনে ভূমিকা ছিল EVA (Extra Vehicular Activity) স্পেশালিস্ট হিসেবে। এটি সেই দায়িত্ব, যেখানে তাকে মহাকাশ স্যুট পরে চাঁদের পৃষ্ঠে হাঁটা, রেডিয়েশন প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেওয়া এবং চাঁদের মাটি থেকে সম্পদ আহরণের (ISRU – In-Situ Resource Utilization) কাজ করতে হয়।

প্রশিক্ষণের সময় ক্রুদের Moon Base এবং Mission Control—দুই দলে ভাগ করা হয়। রুথবা প্রথমে EVA স্পেশালিস্ট হিসেবে Moon Base-এ কাজ করেন এবং পরে Mission Control-এ একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে অন্যদের গাইড দেন। একটি লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে সমস্যার সময় পুরো টিমকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

মহাকাশে নারীর উপস্থিতি

‘মাত্র ১১ শতাংশ মহাকাশচারীই নারী’—রুথবা এই পরিসংখ্যানকে হতাশাজনক না ভেবে এক প্রেরণার উৎস হিসেবে দেখেন। তার মতে, এটি পরিবর্তনের সময়। তিনি বলেন, “NASA-এর নারী বিজ্ঞানীরা যেভাবে অ্যাপোলো মিশনে ভূমিকা রেখেছেন, তেমনি ভবিষ্যতের জন্য আরও নারীদের দরকার যারা বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী ও অনুসন্ধানকারী হিসেবে মহাকাশ জগতে নেতৃত্ব দেবে।”

মহাকাশে টিকে থাকার চাবিকাঠি

মহাকাশে স্বাস্থ্য রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম, পুষ্টিকর হালকা খাবার, পানি পান—এসব নিয়ম মেনে চলতে হয়। সেখানে গোসল হয় না, বরং স্পঞ্জ বাথ, নন-রিন্স শ্যাম্পু এবং পার্সোনাল হাইজিন কিট ব্যবহার করা হয়।

রুথবার মতে, মহাকাশে একাকিত্ব কাটাতে ব্যক্তিগত কিছু জিনিস সঙ্গে রাখা, ফিটনেস ট্রেনিং এবং টিম বন্ডিং অপরিহার্য। কঠোর রুটিন, বিশ্রাম ও সামাজিক সংযোগ মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

স্পেস নেশন, আর্টেমিস ও লুনার সারফেস অপারেশনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে রুথবা ভবিষ্যতের মিশনের জন্য মানসিকভাবে তৈরি। তিনি গবেষণা, চন্দ্রপৃষ্ঠে নমুনা সংগ্রহ এবং নতুন প্রযুক্তি পরীক্ষার মাধ্যমে অবদান রাখতে চান। তার স্বপ্ন এখন আরও বড়: “আমি চাই চাঁদে পা রাখা প্রথম বাংলাদেশি নারী হতে—এটি হবে শুধু আমার জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের এবং বৈশ্বিক মহাকাশ গবেষণার এক ঐতিহাসিক অধ্যায়।”

রুথবার স্বপ্ন নতুনদের অনুপ্রেরণা হতে পারে

রুথবা ইয়াসমিন বলেন, আমি প্রশিক্ষণ থেকে যা শিখেছি, তা আমাকে ভবিষ্যতে মহাকাশ অভিযানে প্রস্তুত করবে। আমি বাংলাদেশের প্রথম নারী হিসেবে চাঁদে পা রাখতে চাই এবং মহাকাশ অনুসন্ধানে একটি ঐতিহাসিক অবদান রাখতে চাই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

অন্যান্য সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *