শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৫ পূর্বাহ্ন

ভারত সীমান্তের কাছে হেলিপোর্ট নির্মাণ করছে চীন!

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৩.৪৭ এএম
  • ৫৮ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

সময় সংবাদ ডেস্ক :

চীনের সেনারা ভারতের অরুণাচল রাজ্যের ৬০ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করেছে বলে সম্প্রতি দাবি করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাজ্যের অঞ্জো জেলায় চীনা সেনাদের ঘাঁটি দেখা গেছে বলেও দাবি তাদের। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই এবার অরুণাচলে চীনের আরেক ঘটনার খবরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

সেভেন সিস্টার্সের অন্তর্ভুক্ত অরুণাচল প্রদেশের স্পর্শকাতর সীমান্তে হেলিপোর্ট নির্মাণ করছে চীন। অঞ্চলটির কাছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরত্বে হেলিপোর্টটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

হেলিপোর্টটি নির্মিত হলে চীন খুব সহজে সামরিক সরঞ্জাম, সেনা বা লজিস্টিক সাপোর্ট দুর্গম ভারত সীমান্তে বা ক্ষেত্র বিশেষে অরুণাচল প্রদেশে পাঠাতে পারবে। এ ছাড়া সেখানে ভারী যুদ্ধাস্ত্র মজুতেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে। অর্থাৎ, সীমান্ত অঞ্চলটিতে যে কোনো সংঘাত মোকাবিলায় দ্রুত জবাব দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে চলেছে চীন। ফলে অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে চীনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধ থাকায় এ ধরনের পদক্ষেপে স্বভাবতই ভারত উদ্বিগ্ন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হেলিপোর্ট নির্মাণের একটি স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, স্বশাসিত তিব্বত অঞ্চলের নিয়াংচি প্রিফ্যাকচারের অন্তর্গত গংরিগাবু কিউ নদীর তীরে জোরেশোরে নির্মাণকাজ চলছে। অঞ্চলটিকে চীনের ভুখণ্ডের অন্তর্গত হিসেবে বিবেচনা করে নয়াদিল্লি। এই ভুখণ্ড নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কোনো বিবাদ নেই।

এনডিটিভির প্রকাশ করা ছবিটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান মাক্সারের তোলা। ২০২৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরের ছবিটিতে দেখা গেছে, হেলিপোর্ট নির্মাণকাজ প্রায় শেষের পথে।

এর আগে ইওএস ডাটা এনালিটিকসের ওপেন সোর্স স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই অঞ্চলে কোনো স্থাপনা ছিল না। তবে গত ৩১ ডিসেম্বরের ছবিতে দেখা গেছে, সেখানে নির্মাণকাজের জন্য জায়গা খালি করা হয়েছে। তবে তখনও ঠিক কী নির্মিত হবে তা অস্পষ্ট ছিল।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রাক্তন কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্রবীণ বক্সী চীনা হেলিপোর্ট সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এটিকে এই অঞ্চলে ভারতের স্বার্থের জন্য ‘হুমকি’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি ভারতীয় বিমানবাহিনীর সাথে সমন্বয় করে জোরালো প্রতিক্রিয়া জানানোর আহ্বান জানান। আরেক বিশেষজ্ঞ ব্রহ্মা চেলানি সীমান্ত এলাকা বরাবর চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক অবকাঠামো নির্মাণকে ভারতের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

হেলিপোর্টের অবকাঠামোতে একটি ৬০০ মিটার রানওয়ে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা হেলিকপ্টার টেক-অফগুলো ঘূর্ণায়মান করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি উচ্চ-ক্ষমতার অপারেশন চালানোর জন্য হেলিপোর্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।

গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছিলেন, সীমান্ত আলোচনায় চিনের সঙ্গে সেনা প্রত্যাহারের ৭৫ শতাংশ সমস্যার সমাধান হয়েছে। যদিও অতীতে আমাদের সম্পর্ক সহজ ছিল না। তিনি বলেন, ২০২০ সালে যা ঘটেছে, তা একাধিক চুক্তির লঙ্ঘন। চীনারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছে। জবাবে আমরা আমাদের সেনা মোতায়েন করি। চিনের সঙ্গে সীমান্ত আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। প্রায় ৭৫ শতাংশ ডিসএনগেজমেন্ট সমস্যার সমাধান হয়েছে। আমাদের এখনো কিছু কাজ করার আছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি সূত্র সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানিয়েছে, চীনের গতিবিধির ওপর তাদের নজর রয়েছে। চীনের হেলিপোর্ট তৈরির বিষয়টি সম্পর্কে তারা অবগত বলে জানিয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

অন্যান্য সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

September 2024
T F S S M T W
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  

All rights reserved © somoysangbad.net
Theme Download From CreativeNews