নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে পিটিয়ে তোফাজ্জল নামে এক ‘ভারসাম্যহীন’ যুবক হত্যার ঘটনায় ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ওয়াজিবুল আলম, মো. জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হুসাইন সাজ্জাদ ও আহসানউল্লাহ।
অপর দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া উইং জানান, গতকাল সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের অতিথি কক্ষে চোর সন্দেহে অজ্ঞাতনামা কিছু লোক কর্তৃক এক ব্যক্তিকে চড়-থাপ্পড় ও মারধর করার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে হলের দক্ষিণ ভবনের অতিথি কক্ষে তাকে আবারও বেধড়ক মারপিট করা হয় মর্মে জানা যায়। এক পর্যায়ে তার অচেতন হয়ে পড়ার সংবাদ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনা শাহবাগ থানায় অবহিত করলে পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। ঢামেক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে মরদেহ তার স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতের নাম তোফাজ্জল হোসেন (৩৫)। তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠাল তলি ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। জানা যায়, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন। একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপসম্পাদক জালাল আহমেদসহ হলের ৮-১০ জন শিক্ষার্থী তোফাজ্জলকে মারধর করছেন।
ঢাবি কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনায় বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর তদন্ত কর্মকর্তা ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করেছেন।
ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, জড়িতদের চিহ্নিতকরণ ও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য পুলিশের পাশাপাশি ডিবির একাধিক টিম কাজ করছে বলেও জানিয়েছে ডিএমপি।
Leave a Reply