সময় সংবাদ ডেস্ক : লাফিয়ে বাড়ছে প্রায় প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম। সবজির বাজারেও একই অবস্থা। বাজারে আগুন কোন মতো নিভছেই না।
এতে চাপে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতা। সরবরাহে খুব একটা ঘাটতি না থাকলেও বেশির ভাগ পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এক কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রজধানীর বাজারগুলোতে দেখা গেছে খুচরা বিক্রেতারা এক কেজি বরবটি বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। অন্যান্য সবজির মধ্যে বেশির ভাগের কেজি এখন ১০০ টাকা ছুঁয়েছে।
রাজধানীর কাওরান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ ও মগবাজারসহ বিভিন্ন বাজারেও বেগুন জাত ভেদে ১৬০-১৯০ টাকা দাম চাইছেন বিক্রেতারা।
গাজরের কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। উচ্ছের কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। তবে করলা কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি করলা কিনতে ক্রেতাদের ৮০ থেকে ১০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। কেজি ১০০ টাকা ছুঁয়েছে পটোল, ঝিঙা, কচুরলতি, কাঁকরোল। বিক্রেতারা এক কেজি পটোল ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঝিঙা। কচুরলতির কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকায়। ছোট একটা ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। কচুরমুখী বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি। মিষ্টি কুমড়ার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি।
বাজারে এখন সবচেয়ে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে কাঁচা পেঁপে ও কাঁচকলা। এক কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কাঁচকলার হালি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কাঁচামরিচ বিক্রি ২৬০ থেকে ৩০০ টাকায়। ভালো মানের শসা কিনতে ক্রেতাদের ৮০ থেকে ১০০ টাকা গুনতে হচ্ছে।
দেশি পেঁয়াজ ১০৫-১১৫ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ৯৫-১০৫ টাকা, দেশি রসুন ২১০-২২০ টাকা, আমদানি করা রসুন (মানভেদে) ২০০-২২০ টাকা, দেশি আদা ৪৫০-৫০০ টাকা, আমদানি করা আদা ২৮০-৩০০ টাকা, শুকনো দেশি লাল মরিচ ৩৫০ টাকা, আমদানি করা শুকনো মরিচ ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, টানা বৃষ্টির কারণেই সবজির দাম হঠাৎ বেড়েছে। তবে বৃষ্টি কমলে বাজারে সবজি সরবরাহ বাড়বে তখন দাম আবার হাতের নাগালে চলে আসবে। আবার অনেকেই বলছেন, উত্তরবঙ্গে বন্যার কারণে সবজির বাজারে বাড়তি চাপ পড়েছে।
এক বিক্রেতা বলেন, কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে নেমে এসেছে। দুদিন আগেও এর দাম ছিল ৩৬০ টাকা। তবে অন্যান্য সবজির দাম চড়া। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি ও বন্যার কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। অধিকাংশ সবজি তো ওইদিক থেকেই আসে
আরেক জন বিক্রেতা বলেন, সব সবজির দামই চড়া। তাই কাস্টমার বেশি সবজি নেয় না। অনেক ক্রেতাই এখন আধা কেজি (৫০০ গ্রাম) সবজি বেশি নিচ্ছেন।
এ সময় একজন ক্রেতা বলেন, দুই-তিনটা সবজি কিনলেই ৫০০ টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে অন্যান্য বাজার কীভাবে করবো। এ বিষয়গুলো সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি তদারকি করা প্রয়োজন। বন্যা-বৃষ্টি হলে যেন সবজি বা নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে না যায় এ বিষয়ে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।
সবজির এমন দাম নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে একজন ক্রেতা বলেন, বাজারে এখন কোনো সবজিতে তো হাত দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। সব ধরনের সবজির দামে আগুন। পকেটে ৫০০ টাকা নিয়ে এলে তেমন কোনো বাজার করাই হয় না। সবজির এত দাম কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারে না। বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমাতে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
কারওয়ান বাজারের একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, বৃষ্টির কারণে কয়েক দিন ধরে বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা কম। এ কারণে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। সহসা সবজির দাম কমবে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ বৃষ্টিতে সবজি ক্ষেতের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
বাজারের আরেক ব্যবসায়ী মিলন বলেন, বৃষ্টির কারণে প্রতি বছরই এ সময় সবজির দাম বাড়ে। তবে অন্যবারের তুলনায় এবার দাম অনেক বেশি। আমরা নিজেরাও বুঝি এত বেশি দামে সবজি কেনা ক্রেতাদের জন্য খুবই কষ্টের। কিন্তু আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা তো কম দামে সবজি কিনতে পরছি না।
বাজারে মাছের সংকট না থাকলেও ১২ থেকে ১৪ শতাংশ বেড়ে মাঝারি রুই মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এখন সব ধরনের সবজির দাম চড়া।
রাজধানীর বনানী কাঁচাবাজার মনিটরিংয়ে এসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুলতানা আক্তার জানান, বাজার সহনীয় করতে কাজ করছেন তারা।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা বলেন, ডিম, মুরগির বাজারের মূল্য নিয়ন্ত্রণে জেলা-উপজেলা পর্যায়য়েও জোড়ালো ভূমিকা রাখবে টাস্কফোর্স।
Leave a Reply