বামনা(বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
বরগুনার বামনায় হত্যার চেষ্টা মামলার আসামি সুদেবেকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী।
আজ ২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল সারে ১০ টায় আমতলী গ্রামের আখড়াবাড়ির মন্দিরের ঘটনাস্থল সড়কের সামনে প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন বিক্ষোভ প্রতিবাদ করেন।
বামনা উপজেলার বাসিন্দা পলাশকে মাথায় রক্তাক্ত আঘাত করে হত্যার চেষ্টা মামলায় অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সুদেবকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি
জানিয়েছেন গ্রামবাসী। মানববন্ধনে গ্রামবাসী বলেন, থানায় মামলা দায়ের করার পরও এখনো পর্যন্ত অভিযুক্ত প্রধান আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে নাই। ফলে আসামি সুদেব হাওলাদার মামলার বাদিসহ বিভিন্ন লোকজনকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।
বর্তমানে সুদেব ও তার সহযোগীদের কারণে এলাকাবাসী এখন নিরাপদ নয়, আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলে জানান এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী বলেন, এই সুদেব এর আগেও একাধিকবার এরকম ঘটনা ঘটিয়েছেন। পূর্বের ঘটনার কোন বিচার না হওয়ায় সে প্রতিনিয়তই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
তাকে (সুদেব হাওলাদার) এখনই থামানো দরকার বলে মনে করেন সচেতন মহল, তা না হলে ভবিষ্যতে এলাকায় খুনের মতো জঘন্য ঘটনা ঘটতে পারে। তার কারণে এলাকা এখন নিরাপদ নয় বলে মনে করছেন মানববন্ধন আয়োজনকারীরা ।
তাই অভিযুক্ত মামামলার আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে এখনই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন,
সুদেব হাওলাদার(৩৫) উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিন আমতলী গ্রামের জীতেন্দ্রনাথ হাওলাদারের ছোট ছেলে। ভুক্তভোগি অনুপম হাওলাদার পলাশ কাঠালিয়া কৃষি অফিসে কর্মরত আছেন। তার বাড়ি বামনা উপজেলার সদরের আমতলী গ্রামে।
এদিকে ওই স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সুদেব হাওলাদার কৃষি কর্মকর্তার মাথায় কাচের গ্লাস ভেঙ্গে রক্তাক্ত জখম করে হত্যা চেষ্টা করার পরে উল্টো একজন সাংবাদিকসহ গ্রামের কয়েকজন যুবকের নামে বরগুনা আদালতে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, আহত অনুপম হাওলাদার পলাশ এর বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বীরেন্দ্রনাথ হাওলাদার, রুহিতা আমতলী হিন্দু কল্যান নবারুন সংঘ সভাপতি ও সাংবাদিক নির্ঝর কান্তি বিশ্বাস, সাধারন সম্পাদক রনজিত হাওলাদার, সমাজ কর্মী রনী খান, তাপস বেপারী, সনজিতা রানী, সাংবাদিক মনোতোষ হাওলাদার প্রমূখ।
ঘটনার বিবরণ :
সদ্য সমাপ্ত হওয়া শারদীয় দূর্গা উৎসবের উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সুদেব হাওলাদার। সে পূজা শুরুর পূর্বে কৃষি কর্মকর্তা (কাঁঠালিয়ায় কর্মরত) অনুপম হাওলাদারে নিকট থেকে প্রতিমা তৈরীর উপকরণ ক্রয়ের জন্য কিছু টাকা ধার নেয়। পূজা শেষে গত ১২ অক্টোবর দুপুরে ওই টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে সুদেব হাওলাদার ক্ষিপ্ত হয়ে মন্দিরের সামনের সড়কে একটি চায়ের দোকানে বসে প্রকাশ্যে পানির গ্লাস ভেঙ্গে ওই কৃষি কর্মকর্তার মাথায় কয়েক দফা আঘাত করে। এতে তার মাথার কয়েক স্থানে ফেটে ও গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। পরে ওই কর্মকর্তার স্ত্রী সুদেব হাওলাদারসহ আরো ৩ জনের নামে বামনা থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করে। ওই মামলা দায়ের করার পরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা সুদেব পলাতক রয়েছেন।
শুধু তাই নয় তিনি স্বর্ন ব্যবসার আড়ালে গ্রামে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে ।
এ ব্যাপারে বামনা থানার অফিসার ইন চার্জ মো, হারুন অর রশিদ হাওলাদার সম্প্রীতি বলেছেন, গত ১২ অক্টোবর দুপুরে আখড়াবাড়ি মন্দিরের সামনে ঘটনাটি ঘটার সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার দিন রাতে মামলা নিয়ে একজন আসামীকে গ্রেফতার করে কোর্টে পাঠাই। মামলার ৪জন আসামীর মধ্যে ৩জন বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। প্রধান আসামী বর্তমানে পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য :ঘটনার দিন দুপুরে বামনা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
Leave a Reply