শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ১০:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ডায়াবেটিসের যে ৫ লক্ষণ উপেক্ষা করবেন না সরকারি কর্মকর্তাদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন উপদেষ্টা ‘পবিত্র আশুরা সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় মানবজাতিকে শক্তি ও সাহস যোগাবে’ উপকূলে ঝড়ের শঙ্কা, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত তুর্কমেনিস্তানকে গোলবন্যায় ভাসিয়েছে বাংলাদেশ জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গত ১৫ বছরের সাংবাদিকতা তদন্ত হবে : প্রেস সচিব মুরাদনগরের চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় আটক ৬ খুব শিগগিরই চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে : খাদ্য উপদেষ্টা সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৪৮ রান টসে জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে দুই পরিবর্তন সাবেক সিইসি এটিএম শামসুল হুদা আর নেই যে কোনো মূল্যে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করব: নাহিদ সরকারি টানা ৩ দিনের ছুটি, পাবেন না যারা দুই বড় বিষয়ে ঐকমত্যে রাজনৈতিক দলগুলো: আলী রীয়াজ আদালত ফ্যাসিস্টমুক্ত করলেই বিচারবিভাগ কলঙ্কমুক্ত হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ ব্যাটিংয়ে দুর্দশা নিয়ে যা বললেন বিসিবি সভাপতি ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও মাফিয়াতন্ত্র শেষ হয়নি : নাহিদ বিচার ব্যবস্থাকে দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে: ডা. তাহের গুমের ঘটনায় সেনাসদস্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে ব্যবস্থা : সেনাসদর দেশে বেড়েছে খাদ্য মজুদ: প্রেস উইং

নিষেধাজ্ঞা শেষ: সাগরের পথে বরগুনার জেলেরা

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯.২৮ এএম
  • ১৬০ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

বরগুনা প্রতিনিধ : ইলিশের প্রজনন বাড়াতে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞা সময় শেষ হয়েছে শনিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে। আশ্বিনের ভরা জোছনা থেকে গত ২২ দিন বরগুনা জেলায় সমুদ্র মোহনা ও নদ-নদীর ২০টি পয়েন্টের তিনশত ছিয়াত্তর কিলোমিটার জুড়ে অভয়াশ্রমে ইলিশ আহরণ, বিপণন, মজুদ, বহন ছিল আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। সরকারের বিধি নিষেধ মান্য করে বরগুনা জেলার প্রায় অর্ধ লাখ জেলে সাগর ও নদীতে মাছ ধরার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ছুটে চলছে ইলিশ আহরণে সাগর পানে, মাঝ নদীতে।

ইলিশের ভরা মৌসুমের দ্বিতীয় ধাপে মাছ ধরতে যাওয়ার পূর্ব মূহুর্তে জেলেরা ছিল মহাকর্ম যজ্ঞে ব্যস্ততার মধ্যে। আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের অবরোধ পর্যন্ত প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়ার সময়ে মাছ ধরা ট্রলারের ত্রুটি বিচ্যুতি পরখ করে নিচ্ছে। ট্রলার মেরামত ডকইয়ার্ড গুলোতে সারি সারি মাছ ধরা ট্রলার মেরামতের ছিল লম্বা লাইন। কেউ আলকাতরা দিচ্ছে, কেউ কাঠের মেরামত করছেন, কেউবা রংয়ের ছোয়ায় শোভাবর্ধনের কাজ করছেন। জেলেদের একটা অংশ জাল বুনন করছে। কেউবা রশি ও অন্য সরঞ্জামাদি ঘুচিয়ে ট্রলারে ভরছে। কেউ বরফ ভরছে। মালিক পক্ষ সাগরে যাওয়ার জন্য রসদ কিনে দিচ্ছেন। মহাজনরা দিচ্ছেন আগাম টাকা। জেলে পাড়ায় কেউ দম ফেলার সময় টুকু পাচ্ছে না। শনিবার দিনভর এমন দৃশ্য ছিল জেলে পল্লীতে।

দেশের দ্বিতীয় মৎস অবতরণ কেন্দ্র পাথরঘাটা বিএফডিসি মার্কেট ও তালতলী উপকেন্দ্র আবার প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। কর্মযজ্ঞে সকলে ফিরে আসায় যেন ঈদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল। পাথরঘাটা মৎস আড়তদার সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান হিরু বলেন, ভরা মৌসুমে সাগরে বারবার লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় সাগর উত্তাল ছিল। বড় বড় কোম্পানির ট্রলার ছাড়া মাঝারি ও ছোট ট্রলারে তেমন বেশি মাছ পাওয়া যায় নাই। এবার ভারতীয় ট্রলার প্রবেশ করতে না পারায় এবং আবহাওয়া অনূকূল থাকায় আশা করছেন মাছ ধরা পড়বে এবং লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবে।

পাথরঘাটা বিএফডিসি ঘাটের সাইফ ফিশিং কোম্পানির মনিরুল হক মাসুম বলেন, আবহাওয়া অনূকূলে থাকলে আল্লাহর রহমতে জালে মাছ ধরা পড়তে পারে। তিনি আরও বলেন বাজারে চাল, ডাল, পিঁয়াজ, এলপিজি গ্যাসের অতিরিক্ত মূল্যে জেলেদের রসদ ক্রয়ে আহরিত মাছের দামের ওপর প্রভাব পড়তে পারে।

জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোস্তফা চৌধুরী বলেন, জেলার নিবন্ধনকৃত চার শত ট্রলার মাছ ধরাতে সাগরে গেছে। রাত বারোটার পর থেকে অনেকে গেছে, আবার অনেকে রোববার সকালে সাগরে চলে যাবে। তিনি বলেন, শত শত ট্রলার সাগরে নির্বিঘ্নে যেতে পারে সেজন্য সাগরে যেন সরকার টহল নিরাপত্তা আরও জোরদার রাখা উচিত।

বরগুনা জেলা মৎস্য বিভাগ থেকে প্রাপ্ত সূত্রে জানা গেছে, মা ইলিশ রক্ষায় বরগুনা জেলা প্রশাসন ও মৎস বিভাগ অতীতের চেয়ে এবার ছিল সতর্ক অবস্থায়। ইলিশ প্রজনন বৃদ্ধি করতে ২২ দিনের অবরোধ চলাকালীন সময়ে আইন অমান্য করে মৎস শিকার ঠেকাতে তারা ৭৭টি মোবাইল কোর্ট ও ৩৬১টি অভিযান পরিচালনা করেছে। এসময় তারা ৫০ জন জেলের থেকে এক লাখ বিশ হাজার টাকা নগদ অর্থ জরিমানা আদায় ও তাদের বিরুদ্ধে ১৯ টি মামলা দায়ের করেছে। এক লাখ চুয়ান্ন হাজার সাত শত ছেচল্লিশ টাকা মূল্যের তিন হাজার আট শত আটান্ন মিটার জাল জব্দ করার পাশাপাশি এক দশমিক আট মেট্রিক টন ইলিশ জব্দ করেছে। এসময় জেলার ৪৭ হাজার চার শত চল্লিশ জন নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে মানবিক কর্মসূচীর আওতায় ৩৬ হাজার ১০ জন জেলের জন্য বরাদ্দকৃত ৯০০.২৫০ মেট্রিকটন চাল বিতরণ করা হয়।

বরগুনা জেলা মৎস কর্মকর্তা মোঃ মহসিন বলেন, এবছর মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পূর্ব থেকে জেলার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে সভা করা হয়েছে। ফলে এবারের এই নিষেধাজ্ঞার সময় অতীতের তুলনায় সাগর মোহনা ও নদ নদীতে অভিযান চলাকালীন সময়ে জেলেদের দেখা মিলে নি। এছাড়াও এবার আমরা কৌশলগত ভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বিবেচনা করে সেখানে আমাদের নিয়মিতভাবে লোকজন অবস্থান রেখেছিলাম। তিনি আরও বলেন, গত ১ নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ধরা বন্ধে বরগুনা জেলা মৎস বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে। ২৫ সেন্টিমিটার বা ১০ ইঞ্চি মাপের ছোট ইলিশ ঝাটকা ধরা, ক্রয় বিক্রয়, পরিবহন আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, বেহুন্দী জাল, চড়গড়া জাল, খুটা জাল, কারেন্ট জাল ব্যবহারকারী ও বিক্রেতাদের মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ অনুযায়ী মামলা দায়ের, জেল, জরিমানার আওতায় নিয়ে আসা হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী, কোষ্টগার্ড, পুলিশ এবং মৎস বিভাগ যৌথভাবে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞায় একসঙ্গে কাজ করছে। অন্তত বরগুনা জেলায় কোন ভাবে যেন ইলিশ মাছ ধরা না হয় বাজারজাত না হয় সেজন্য আমরা কাজ করেছি। একাজে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই সহয়তা করেছে। তিনি আরো বলেন, ইলিশের ধারাবাহিক উৎপাদন রক্ষা করতে মা ইলিশের ডিম ছাড়ার সময়টুকু যাতে নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পারে তার ব্যবস্হা গ্রহণ বরগুনাবাসী ও আমরা সচেষ্ট ছিলাম।

সংবাদটি শেয়ার করুন

অন্যান্য সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ

November 2025
T F S S M T W
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031