সময় সংবাদ প্রতিবেদক: রাজধানীর পল্লবীর মিরপুর-১১ নম্বরের একটি বাসায় পরকীয়া প্রেমের জেরে স্বামী-স্ত্রী খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় গাউস (৩৩) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৮ মে) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে খবর পেয়ে মিরপুর-১১ নম্বরের বি ব্লকের ৩৫ নম্বর বাসায় পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত দুজন হলেন, দোলন আক্তার দোলা (২৯) ও তার স্বামী স্বামী নাজমুল হোসেন পাপ্পু (৩৫)। দোলা উত্তরার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলএমের ছাত্রী।
পুলিশ বলছে, দোলার পরকীয়া প্রেমিক গাউস (৩৩) দুজনকে খুন করেছেন। তাকে আটক করা হয়েছে।
নাজমুল হোসেন পাপ্পু (৩৫) তার স্ত্রী দোলন আক্তার দোলা (২৯) ছবি: সংগৃহীত
সূত্র জানায়, ঘটনার পর ঘাতক গাউস মিয়াকে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পল্লবী থানা পুলিশ আটক করে। মতিউর রহমান মিয়ার ছেলে গাউস মিয়া।তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায়।
তিনি সৌদি প্রবাসী। তিনি সৌদি আরবে থাকার সময় নয় মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে দোলার সঙ্গে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে। গত জানুয়ারিতে অবিবাহিত গাউস সৌদি আরব থেকে ঢাকায় আসেন।
নিহত দোলন আক্তার দোলার বাড়ি বরগুনার সদর উপজেলায়। আর পাপ্পু বাড়ি বরগুনার জেলার বামনা উপজেলায় দক্ষিণ কাকচিড়া।মোঃ বাদল হাওলাদার (মাস্টার) এর একমাত্র ছেলে।
রক্তমাখা ছুরি হাতে অভিযুক্ত গাউস মিয়াকে আটক করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
জানা গেছে– পাপ্পু বরগুনায় এক ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টিভ হিসেবে চাকরি করে বরগুনাতেই থাকতেন এবং তার স্ত্রী দোলা ঢাকার পল্লবীতে একটি ভারা বাসায় থেকে পড়া লেখা করতেন।
যেখানে তার স্ত্রী থাকতেন সেখানে গাউস নামের এক প্রবাসী ছেলের সাথে পরোকিয়ায় জড়িয়ে পরেন।
পাপ্পু–গত তিন দিন আগে অফিসের কাজে ঢাকায় যান।আজ বুধবার তার বাড়িতে ফেরার কথা থাকলেও দুপুরে স্ত্রীর পরোকিয়ার জেরে প্রেমিকের হাতে পাপ্পু ও তার স্ত্রী গুন হন।
নিহত পাপ্পুর চাচা সাবেক ইউপি সদস্য মো. সেন্টু মিয়া জানান, তাঁর ভাইয়ের ছেলে পাপ্পু বরগুনায় জেনারেল ফার্মা নামে একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির চাকরি করেন। আর তাঁর স্ত্রী দোলন এলএলবি পাস করে ইন্টার্ন করছেন। এই সুবাদে দোলন ঢাকার পল্লবী থানার মিরপুর ১১ বি ব্লকের ৩৫ নম্বর বাড়ির ৫ম তলায় সাবলেট থাকতেন।
গতকাল মঙ্গলবার পাপ্পু বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার জন্য ঢাকায় চিকিৎসার জন্য যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা দুজনে ওই ভাড়া বাসায় থাকেন। আজ পরিবারের স্বজনেরা পল্লবী থানা-পুলিশের মাধ্যমে তাঁদের খুন হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ওসি শফিউল আলম বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া গাউস মিয়া দাবি করেছেন, ওই নারীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। গাউস এর আগেও খালাতো ভাই পরিচয়ে ওই বাসায় এসেছেন। এসবের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের পল্লবী জোনের এডিসি সালেহ মুহম্মদ জাকারিয়া জানান, পরকীয়া সম্পর্কের জেরে ওই দম্পতিকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ আসামিকেও গ্রেপ্তার করেছে।
এডিসি বলেন, নিহত দম্পতি ওই বাসায় সাবলেট থাকতেন। দুপুর দেড়টার দিকে ছুরি হাতে বাসায় কথিত প্রেমিক গাউস মিয়াকে ঢুকতে দেখেন ফ্ল্যাটের আরেক ভাড়াটিয়া। হঠাৎ আর্তচিৎকারে ও পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনি বাইরে থেকে দরজা আটকে বের হয়ে যান। ওই ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ এসে দম্পতির রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে। তাঁদের ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে গাউস মিয়াকে। সে ঢাকার পল্লবীতে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
Leave a Reply