নিউজ ডেস্ক,সময় সংবাদ : মিয়ানমারের নারীরা র্যাঙ্কিংয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে। কিন্তু, মাঠে বাংলাদেশের মেয়েদের খেলা দেখে কে বলবে তারা পিছিয়ে আছে। বরং, মিয়ানমারের বিপক্ষে বাংলাদেশ খেলেছে ফেভারিটের মতো। ঋতুপর্ণা চাকমার গতির কাছে বারবার পরাস্ত হয়েছে স্বাগতিক নারীরা। শেষ পর্যন্ত ব্যবধান গড়েছেন ঋতুই। তার জোড়া গোলে আজ বুধবার (২ জুলাই) ২-১ গোলে মিয়ানমারকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এক পা দিয়ে রেখেছে ২০২৬ এর এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূলপর্বে।
শুরু থেকেই মিয়ানমারের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে বাংলাদেশ। সেই আক্রমণ থেকে প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যায় বাংলাদেশ। লিড এনে দেন ঋতুপর্ণা। ম্যাচের ১৮ মিনিটে বক্সের ঠিক বাইরে ফাউলের শিকার হন শামসুন্নাহার সিনিয়র। ফাউলের বাঁশি বাজান রেফারি। সেট পিস থেকে ঋতুপর্ণার নেওয়া শট আটকে যায় মিয়ানমারের ডিফেন্ডারদের গায়ে লেগে। কিন্তু আবারও বল পেয়ে যান ঋতুপর্ণা। এবার আর কোনো ভুল নয়। বাংলাদেশ ফরোয়ার্ডের নেওয়া শট দূরের পোস্ট দিয়ে আশ্রয় নেয় জালে। বলের লাইনে ঝাপিয়ে পড়েও সেটাকে আটকাতে পারেননি মিয়ানমার গোলরক্ষক।
৬৬ মিনিটে ডিফেন্সের ভুলে বিপদ প্রায় ঘটিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। এ যাত্রায় বক্সের ডান পাশ থেকে সেটি ক্লিয়ার করেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। ৬৮ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে স্বাগতিক গ্যালারিকে প্রায় নিশ্চুপ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেটা বাইরে চলে যায় একটুর জন্য। বক্সের বাপাশ থেকে ঋতুপর্ণা চাকমা ক্রস বাড়িয়েছিলেন। পা ছুঁইয়েছিলেন মনিকা চাকমা। বল অল্পের জন্য জালের দেখা পায়নি।
৩ মিনিট পরে এবার স্বাগতিক গ্যালারিতে পিনপতন নিরবতা নিয়ে আসেন ঋতুপর্ণা। দুর্দান্ত এক গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তিনি। বাঁপাশে প্রথমে গতি দিয়ে পরাস্ত করেন মিয়ানমারের ফুটবলারকে। এরপর পায়ের কারিকুরি দিয়ে বল নিয়ে যান বক্সে। বক্সের ঠিক মাথা থেকে শট নেন গোলের উদ্দেশে। লাফিয়ে উঠেও টপ কর্ণার দিয়ে যাওয়া বলের নাগাল পাননি মিয়ানমার গোলরক্ষক।
পরের মিনিটে ডানপাশে বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে নেওয়া সুলতানা খাতুনের শট চলে যায় গোলবারের পাশ ঘেঁষে। ৭৫ মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করার সুযোগ হাতছাড়া করেন মনিকা। আবারও বাঁপাশ থেকে বক্সের ঠিক মাঝখানে ক্রস বাড়ান ঋতুপর্ণা। ফাঁকায় বলও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বলের স্পর্শটা একটু জোরে হওয়ায় চলে যায় গোলরক্ষকের হাতে।
পরের মিনিটে অবশ্য ব্যবধান কমানোর সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে মিয়ানমার। মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো বল ফাঁকায় পেয়েছিলেন মিয়ানমারের ফরোয়ার্ড। তার সামনে ছিল শুধু বাংলাদেশের গোলরক্ষক রূপনা চাকমা। রূপনাকে পরাস্ত করতে পারেননি মিয়ানমার ফরোয়ার্ড। তা গ্লাভসবন্দি করেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক।
৮৭ মিনিটে আরেকবার বংলাদেশের বক্সে কিছুটা ভয় ছড়িয়েছিল মিয়ানমার। কিন্তু সেটি বেশ ভালোভাবে মোকাবিলা করেন বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা। পরের মিনিটেই স্বাগতিক গ্যালারিকে আবারও জাগিয়ে তোলেন মিয়ানমার ফরোয়ার্ড উইন উইন। ব্যবধান কমান গোলের। বক্সের বাম পাশ থেকে বাড়ানো ক্রস ফাঁকায় পেয়ে যান তিনি। সেটাকে নিখুঁতভাবে জড়িয়ে দেন জালে। গোলরক্ষক রূপনা সেটি দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। তবে সেই গোল কেবল শান্তনা দিয়েছে স্বাগতিকদের।
এরপর রেফারি শেষের বাঁশি বাজাতে উদযাপনে মেতে ওঠে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ড্র করলে বাংলাদেশ চলে যাবে এশিয়ান কাপের মূলপর্বে যাওয়ার।
Leave a Reply