সময়সংবাদ ডেস্ক :
দারুণ লড়াই করলো বাংলাদেশ, একেই বলে ফিরে আসা। একেই বলেই জেতার জেদ। দারুণ লড়াই করলো বাংলাদেশ। দেখিয়ে দিলো পিছিয়ে থেকেও লড়া যায়। ফিরে আসা যায়। জেতাও যায়। সাফ অনুর্ধ্ব-১৭ ফুটবলে সেই বীরত্ব দেখিয়ে ফাইনালে পৌছে গেল বাংলাদেশ। সেমিতে হারাল পাকিস্তানকে। ট্রাইব্রেকারে জিতলো ৮-৭ গোল ব্যবধানে। গোলের হিসেব দেখেই বুঝতে পারছেন টাইব্রেকারেও তুমুল লড়াই হয়েছে! পুরো ম্যাচেও তাই!
শুরুর ৯০ মিনিট খেলা ২-২ গোলে ড্র ছিল। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী অতিরিক্ত সময়ের খেলা নেই। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেই পর্বে জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। একটু শুনে মনে হতে পারে সহজেই জিতেছি বাংলাদেশ এই ম্যাচ। আদতে কিন্তু তা নয়। ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে এই ম্যাচে সমতা আনে বাংলাদেশ। তারপর টাইব্রেকারে সংগ্রামী লড়াই করে জয় তুলে নেয়।
ম্যাচের ৩২ মিনিটের সময় পাকিস্তান কর্ণার থেকে পাওয়া গোলে এগিয়ে যায়। পিছিয়ে পড়ে ম্যাচের ফেরার চেষ্টা চালায় বাংলাদেশ। কিন্তু এই অর্ধে সফল হয়নি। মাঝ বিরতিতে দলকে চাঙ্গা রেখে কোচ বলে আক্রমণাত্মক মেজাজের খেলা বজায় রাখতে। ম্যাচের ৬২ মিনিটের সময় দ্বিতীয় ধাক্কা খায় দল। ৬১ মিনিটের সময় ডি বক্সে বাংলাদেশের এক ডিফেন্ডারের হাতে বল লাগলে রেফারি হ্যান্ডবলের বাঁশি বাজিয়ে স্পটকিকের নির্দেশ দেন। পেনাল্টি থেকে পাওয়া গোলে ম্যাচের পাকিস্তানের লিড ২-০ গোলের।
বড় ব্যবধানে পিছিয়েও হতাশ হয়নি বাংলাদেশ। অপেক্ষায় থাকে সুযোগ তৈরির। ৭৫ মিনিটের সময় মিঠু চৌধুরীর গোলে ম্যাচে ফেরার রসদ পায় বাংলাদেশ। কর্ণার থেকে আসা বলে গোল করে মিঠু দলকে ম্যাচে রাখেন। ম্যাচে সমতা আনার জন্য বাংলাদেশ তখন মরিয়া হয়ে উঠে। কিন্তু গোলের দেখা যে মিলছে না! ডাগআউটে দাড়ানো বাংলাদেশ কোচ বারবার ঘড়ির দিকে তাকান। সহকারি রেফারি জানিয়ে দেন ইনজুরি টাইম মিলেছে ৭ মিনিটের। এই বাড়তি সময় বাংলাদেশ যেন আরো প্রাণশক্তি এনে দিল। টানা আক্রমণের সুফল তুলে নিল দল। ইনজুরি টাইমের চতুর্থ মিনিটেই কাজের কাজটা করলেন বদলি খেলোয়াড় মানিক। তার শটেই গো..ও..ল! ম্যাচে নাটকীয় সমতা ২-২ গোলের।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হয় ২-২ গোলের ড্রয়ে। শেষের দিকে লড়াইয়ে ফিরে আসার এই উদ্যমতা নিয়ে বাংলাদেশ টাইব্রেকারে নামে। সেখানেও দু’দলের গোলের পর গোল হয়! সেই লড়াই শেষ পর্যন্ত থামলো বাংলাদেশের ৮-৭ গোলের জয়ে।
ভুটানে চলতি এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলার সুযোগটাই এসেছে নাটকীয় ভঙ্গিতে। টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে একটি হার এবং একটি ড্র নিয়ে বিদায়ের প্রহর গুনছিল বাংলাদেশ দল। শেষে গোলগড়ে এগিয়ে থাকার সুবাদে কোনো মতে খুঁড়িয়ে সেমিফাইনালের টিকেট মিললো।
আর সেই সেমিফাইনালে দারুণ উজ্জ্বীবিত ফুটবল খেলে পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশ এখন টুর্নামেন্টের ফাইনালে। বয়সভিত্তিক এই টুর্নামেন্টে এবারই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ফাইনালে খেলছে।
৩০ সেপ্টেম্বর ফাইনালে ভারতের সঙ্গে লড়বে বাংলাদেশ।
Leave a Reply