শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বামনায় দুস্থ্যদের চিকিৎসা দিচ্ছে নৌবাহিনী বিমান বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে ২০, চিকিৎসাধীন ১৭১ বিধ্বস্ত নেপাল, সাফে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে দারুণ জয় দিয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের তফশিল ঘোষণা, সেপ্টেম্বরে ডাকসুর নির্বাচন রাজধানীতে মা-মেয়ে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড গোপালগঞ্জে গণগ্রেফতার হচ্ছে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাশিয়ার উপকূলে ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা শেখ হাসিনাকে ক্ষমা করা যাবে না, তার বিচার হবেই: ফখরুল ফের মেসির জোড়া গোল, ছাড়িয়ে গেলেন রোনালদোকে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মানবাধিকার সহায়তার জন্য দেশে জাতিসংঘের মিশন: প্রেস উইং পার্বত্য চুক্তির সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গডফাদারের আবির্ভাব হতে দেব না: নাহিদ ইসলাম সালাহউদ্দিনকে ‘গডফাদার’ বলায়, এনসিপির সভাস্থল ভাঙচুর খুলনায় বিষক্রিয়ায় ৫ জনের মৃত্যু জামায়াতের কেউ এমপি হলে ট্যাক্সবিহীন গাড়িতে চড়বে না: আমির জুলাইয়ের প্রথম শহীদ সাংবাদিক হাসান মেহেদীর মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশনের কার্যক্রম শুরু গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় আসামি ৪৭৫

জুলাইয়ের প্রথম শহীদ সাংবাদিক হাসান মেহেদীর মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫, ১.৩০ এএম
  • ৭৩ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে
শহীদ সাংবাদিক মেহেদী

নিউজ ডেস্ক, সময় সংবাদ :আজ থেকে ঠিক এক বছর আগের এক সন্ধ্যা। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে আমরা ফিরে যাই ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই। দিনটি বাংলাদেশের সাংবাদিকতা এবং গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এই দিনে পেশাগত দায়িত্বের প্রতি অবিচল থেকে, সত্যকে তুলে আনার সংগ্রামে রাজপথে প্রাণ দিয়েছিলেন দৈনিক ঢাকা টাইমসের সিনিয়র রিপোর্টার, অকুতোভয় সাংবাদিক হাসান মেহেদী।

দেখতে দেখেতে বছর পেরিয়ে গেছে। আজ তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা তাকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।

সেদিন রাজধানী ঢাকা ছিল ছাত্র-জনতার উত্তাল আন্দোলনে প্রকম্পিত। কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া সেই আন্দোলন তত দিনে রূপ নিয়েছে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে। সেই আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় গিয়েছিলেন হাসান মেহেদী।

সহকর্মীরা জানান, তিনি সেদিন পুলিশের পাশাপাশি থেকে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর হাতে ক্যামেরা আর কলম ছাড়া আর কিছুই ছিল না। কিন্তু সত্য তুলে ধরার সেই অস্ত্রই হয়তো কারও কারও জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছিল। সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহের একপর্যায়ে পুলিশের ছোড়া গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় হাসান মেহেদীর বুক।

সহর্কমী মাংবাদিক ইমন তাকে উদ্ধার করে যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়, ততক্ষণে সব শেষ। কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন মেহেদিকে। নিভে যায় একটি সম্ভাবনাময় প্রাণ, একটি জ্বলন্ত মশাল।

মাত্র ৩১ বছর বয়সে থেমে যায় হাসান মেহেদীর পথচলা। তিনি শুধু একজন সাংবাদিকই ছিলেন না, ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, বাবা-মায়ের স্বপ্ন, স্ত্রীর অবলম্বন এবং সাত মাস ও সাড়ে তিন বছর বয়সী দুই শিশুকন্যার গর্বিত বাবা।

পটুয়াখালীর বাউফলের গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় এসেছিলেন অনেক স্বপ্ন নিয়ে। দুর্নীতি দমন কমিশন বিটে কাজ করা এই সাংবাদিক তাঁর লেখনী দিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল সাংবাদিকতার মাধ্যমে দেশ ও মানুষের সেবা করবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন কেড়ে নিল রাষ্ট্রযন্ত্রের নির্মম বুলেট।

হাসান মেহেদীর এই হত্যাকাণ্ড শুধু ঢাকা টাইমস বা তার পরিবারকেই নয়, স্তব্ধ করে দিয়েছিল পুরো দেশ এবং বিশ্ব বিবেককে। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস, সাধারন সাংবাদিক সমাজ এবং ইউনেস্কোর মতো আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায়। তার মৃত্যু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, একটি স্বৈরাচারী শাসনামলে সত্য তুলে আনার চেষ্টা করা কতটা বিপজ্জনক। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হয় গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ এবং সাংবাদিকদের ওপর চালানো দমন-পীড়নের ভয়াবহ চিত্র।

হাসান মেহেদীর রক্তদান বৃথা যায়নি। তার মৃত্যু চলমান ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে নতুন মাত্রা দেয়, হয়ে ওঠে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক। তিনি ছিলেন সেই জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ সাংবাদিক। বাংলাদেশের যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামের মাঠে কোনো সাংবাদিকের নিহত হওয়া ঘটনাও এটি প্রথম। তার আত্মত্যাগ আন্দোলনকারীদের আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তোলে। সপ্তাহ দুয়েকের মাথায় পতন ঘটে বাংলাদেশে চেপে বসা স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার। শুরু হয় নতুন এক গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথে যাত্রা। হাসান মেহেদীরা নিজেদের জীবন দিয়ে সেই নতুন সকালের পথ তৈরি করে দিয়ে গেছেন।বাংলাদেশের পর্যটন

এক বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু হাসান মেহেদীর স্মৃতি আমাদের কাছে অমলিন। ঢাকা টাইমসের করিডোর থেকে রাজপথ, তাঁর সহকর্মী থেকে শুরু করে মুক্তিকামী জনতা, কেউই ভোলেনি তার আত্মত্যাগের কথা।

যত দিন বাংলাদেশে মুক্ত সাংবাদিকতার চর্চা থাকবে, যত দিন মানুষ সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কথা বলবে, তত দিন হাসান মেহেদীর নাম শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারিত হবে।

আমাদের অকুতোভয় সহযোদ্ধা, তোমাকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। তোমার দেখানো পথে সত্যের মশাল জ্বালিয়ে রাখাই হোক আমাদের আজকের অঙ্গীকার।

সংবাদটি শেয়ার করুন

অন্যান্য সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ

July 2025
T F S S M T W
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930