নিউজ ডেস্ক, সময় সংবাদ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে তফশিল সংক্রান্ত চূড়ান্ত সভা শেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী ২৯ জুলাই নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হবে এবং সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচন হতে পারে।
রবিবার (২০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ছাত্র সংগঠন এবং ডাকসুর অন্যান্য অংশীজনদের আলোচনার পর এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণা দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, ‘এটাই একমাত্র অফিসিয়াল তারিখ। তফশিল ঘোষণার পর ৪০-৪৫ দিন সময় লাগবে বলে আশা করছি। আমরা এ সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে বদ্ধপরিকর।’
এবার ছয় কেন্দ্রে কেন্দ্রীয়ভাবে ভোটগ্রহণ:
এবার কেন্দ্রীয়ভাবে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ভোটগ্রহণ হবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৬টি কেন্দ্র হলো- কার্জন হল কেন্দ্র (পরীক্ষার হল) যেখানে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, অমর একুশে হল ও ফজলুল হক হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দেবেন; শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র যেখানে জগন্নাথ হল, শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা; ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে রোকেয়া হল, শামসুন নাহার হল ও কবি সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্রে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ও শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে পারবেন; সিনেট ভবন কেন্দ্রে (অ্যালামনাই ফ্লোর, সেমিনার কক্ষ, ডাইনিং রুম), স্যার এ এফ রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মহসীন হল ও বিজয় একাত্তর হল এবং উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে সূর্যসেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, শেখ মুজিবুর রহমান হল ও কবি জসীম উদ্দীন হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে পারবেন।
প্রার্থী হওয়ার নির্দেশনা:
সভায় জানানো হয়, ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের যেসব শিক্ষার্থীর মাস্টার্সের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, তারা আসন্ন ডাকসু বা হল ইউনিয়ন নির্বাচনে ভোটার বা প্রার্থী হওয়ার যোগ্য নন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ২৮ বছর অচল থাকার পর ২০১৯ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে সচল হয় ডাকসু ও ১৮টি হল সংসদ। ডাকসু ও হল সংসদের সর্বশেষ কমিটির মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ২০২১ সালের ৫ অক্টোবর থেকে হল ও ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া হয়। সেই নির্বাচনের পাঁচ বছর পার হতে চলছে। এর পর চার বছর পেরোলেও ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ঢাবি শিক্ষার্থীদের অন্যতম দাবি ছিল ছাত্র সংসদ নির্বাচন করা। কেননা শিক্ষার্থীরা দলীয় লেজুড়বৃত্তি রাজনীতিের গেঁড়াকলে পড়তে চান না, এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফের ডাকসু নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হয়। ডাকসু নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত নির্বাচনের আশ্বাস দিলেও ছিল না কোন নির্দিষ্ট সময়সূচি। এবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এমন ঘোষণার পর সেই অনিশ্চয়তা কেটে গেলো।
Leave a Reply