সময় সংবাদ ডেস্ক :
বাংলাদেশের মানুষ ভারত ও পাকিস্তানের মানুষের চেয়ে গড়ে বেশি আয় করেন। কয়েক বছর ধরেই ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাথাপিছু জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) ক্ষেত্রে টানা চার বছর ধরে ভারতের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ।
আইএমএফের সর্বশেষ বিশ্লেষণের হিসেবে, ২০২৩ সালে এসে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়ায় ২ হাজার ৬২১ ডলার। আর ভারতের মাথাপিছু জিডিপি ২ হাজার ৬১২ ডলার। ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো মাথাপিছু জিডিপিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। ঐ বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ১ হাজার ৮৮৮ ডলার। আর ভারতের ছিল ১ হাজার ৮৭৭ ডলার।
২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে মাথাপিছু জিডিপিতে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ। ঐ বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৬৫৯ ডলার। পাকিস্তানের ছিল ১ হাজার ৪৬৮ ডলার। এরপর আর কোনো বছরই পাকিস্তান বাংলাদেশকে ছাড়াতে পারেনি। সর্বশেষ ২০২৩ সালে পাকিস্তানের মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়ায় ১ হাজার ৪৭১ ডলার।
ভুটানের মাথাপিছু জাতীয় আয় ৭২০ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৭৪০ ডলার। ঐ সময়ে দেশটির মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৪১৯ শতাংশ। মিয়ানমারের মাথাপিছু জাতীয় আয় ২০০০ সালে ছিল ১৯০ ডলার। গত বছর তা বেড়ে দাড়িয়েছে ১ হাজার ২১০ ডলারে। ঐ সময়ে দেশটির মাথাপিছু জাতীয় আয় বেড়েছে ৫৩৭ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারি ও বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা স্থবির হলেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার একেবারে নেতিবাচক ধারায় যায়নি। প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তবে তা ছিল ধীরগতির। জাতীয় মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে গত দুই যুগের ব্যবধানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মিয়ানমার থেকে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক স্বল্প আয়ের দেশ ঋণ সংকটের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সে ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৪ শতাংশে নেমে আসে। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা আরো কমে ৩ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে যায়। পরবর্তী দুই বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে গতি অর্জন করে। ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে ৭ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়ায়। কিন্তু ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার আবার ধীর হয়ে আসে।
চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে পূর্ভাবাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ৬৩টি দেশকে নিম্ন আয়ের হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করে বিশ্বব্যাংক। এরপর থেকে ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশসহ ৩৯টি দেশ মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় উঠে আসে। যার অর্থ ২০২৩ সাল নাগাদ তাদের বার্ষিক মাথাপিছু আয় ১ হাজার ১৪৫ ডলারের উপরে ছিল। বাকি দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার প্রত্যাশিত হয়নি। প্রবৃদ্ধির হারে টেকসই হওয়ায় নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মধ্যে মাত্র ৬টির ২০৫০ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের মর্যাদা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। ২৫ বছরে অগ্রগতির বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই দেশগুলো এগিয়ে গেছে। এসব নিয়ে বিশ্বব্যাংক আসন্ন গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস রিপোর্টে বিস্তারিত তুলে ধরবে। এটি প্রকাশিত হবে আগামী ১৪ জানুয়ারি।
Leave a Reply